পদ্মাসেতু প্রকল্পে যেসব তথ্য উপাত্ত পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান টিম তা জনসম্মুখে তুলে ধরার দাবি জানিয়েছেন সংস্থাটির আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক অনানুষ্ঠানিক ব্রিফ্রিংয়ে দুদকে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, “আমি কমিশনের কাছে প্রস্তাব করেছি যেসব দালিলিক তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে তা যেন অনুসন্ধানের পর জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়। তাহলে মানুষের মনে বিভ্রান্ত কমবে।”
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মামলার সুপারিশ থেকে বাদ দেওয়ার কারণে চলতি সপ্তাহে মামলা করার সিদ্ধান্ত থেকে দুদক পিছিয়েছে কি না—এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “মামলার ক্ষেত্রে তিনি বাঁধা নন। তার কারণে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না, এটাও সঠিক নয়। আইনি কিছু বিষয় আছে তা আমরা দেখছি।” প্রচলিত আইনে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাংক প্যানেলের সঙ্গে আলোচনার পথ বন্ধ হয়নি। আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।”
এদিন সন্ধ্যায় কমিশন থেকে বের হওয়ার সময় দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, “প্যানেল আমাদের কিছু পরামর্শ দিয়েছে। আমরা সেগুলো পর্যালোচনা করে শিগগিরই আইনি ব্যবস্থা নেবো।”
তিনি বলেন, “দুদক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের পরামর্শ শুনবে, পর্যালোচনা করবে কিন্তু সিদ্ধান্ত নেবে দুদক। আইনি ব্যবস্থা নেবে দুদকই।”
লুই গ্যাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পোর নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যাংক বিশেষজ্ঞ দল গত শনিবার রাতে ঢাকায় আসে। সোম থেকে বুধবার এই তিন দিনে তিনদফা বৈঠক হয় দুদকের সঙ্গে।
প্যানেলের অন্য দুজন সদস্য হংকংয়ের দুর্নীতিবিরোধী স্বাধীন কমিশনের সাবেক প্রধান টিমোথি টং ও যুক্তরাজ্যের সিরিয়াস ফ্রড অফিসের সাবেক পরিচালক রিচার্ড অ্যাল্ডারম্যান।
প্রসঙ্গত, পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষ ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল করে গত ২৯ জুন। পরে সরকার অভিযোগ তদন্তে বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি সই করার পর বিশ্বব্যাংক আবার অর্থায়নে ফিরে আসার ঘোষণা দেয় গত ২০ সেপ্টেম্বর।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ দলটি ফিরে গিয়ে তাদের প্রতিবেদন দেবে। দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গৃহীত আইনি পদক্ষেপে সন্তুষ্ট না হলে আবারও সংকটে পড়বে পদ্মাসেতু প্রকল্প।