সংবিধানে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার পদ্ধতি ফিরিয়ে এনে নির্বাচন দিলে জাতীয় পার্টি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে দলের ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবসের’ আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
এরশাদ বলেন, “আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি আপনাদের সংবিধান পরিবর্তন করুন, রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার আনুন, নির্বাচন দিন। আমার বিরুদ্ধে নির্বাচন করুন। চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি কেউ দাঁড়াতে পারবেন না।”
১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ আন্দোলনের পর ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সংবিধানকে রক্ষা করে সেদিন ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলাম বলেই সংবিধান এখনো চালু আছে, গণতন্ত্র এখনো চালু আছে।”
রক্তপাত এড়ানোর জন্য ক্ষমতা ছেয়ে দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ।
তিনি বলেন, “আমি ক্ষমতা নাও ছাড়তে পারতাম। আমি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলাম। নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ছিলাম। আমি রক্ত পছন্দ করি না বলেই সেদিন ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলাম।”
তত্ত্বাবধায়ক বিতর্ক প্রসঙ্গে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা ক্ষমতায় গেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন হবে না। নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করবো। আনুপাতিক হারে নির্বাচন হবে। যে দল বেশি ভোট পাবে সেই অনুপাতে তারা সংসদে আসন পাবে। অস্ত্রেরও প্রয়োজন হবে না। অর্থেরও প্রয়োজন হবে না। জনপ্রিয়তার প্রয়োজন হবে।”
এই প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনে দেয়া হয়েছে বলেও জানান এরশাদ।
“তিনশ’ প্রার্থীর নাম দেব, আমি যদি ৩০ পার্সেন্ট ভোট পাই তাহলে ৯০টা সিট পাব। সিরিয়ালি ৯০টা সিট। কেউ যদি মারা যান ৯১তম জন সেখানে আসবেন।”
ক্ষমতায় গেলে দেশে প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে বলেও জানান তিনি।
“আজ হোক আর কাল হোক প্রাদেশিক ব্যবস্থা এদেশে আসতেই হবে। পৃথিবীর একমাত্র দেশ বাংলাদেশ যেখানে এই ব্যবস্থা নাই। একককেন্দ্রীক সরকার পৃথিবীর কোথাও নেই। ষোল কোটি মানুষের জন্য একজন মানুষের সরকার এটা ইম্পসিবল।”
বর্তমান এবং আগের সরকারগুলোর দুর্নীতি প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, “এরশাদের সময়ে কেউ বলেনি যে আমরা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন। এখন আমি চলে যাওয়ার পর কী সমস্ত উদ্ধার হয়ে গেছে? এখন বুড়িগঙ্গায় পানি নাই, শুধু দুধ। শীতলক্ষ্যায় শুধু মধু। মানুষ পোলাও কোরমা খায় প্রতিদিন।”
জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এবং দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতীর সভাপতিতে আলোচনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমেদ প্রমুখ।