‘এই বাংলাদেশ হচ্ছে উচ্চাঙ্গসংগীতের জন্মভূমি। আপনারা জানেন না এই ভাটি বাংলার লোক গান থেকেই উচ্চাঙ্গসংগীতের প্রাণ আসে। আমার গর্বে বুকটা ভরে যায় এ দেশে উচ্চাঙ্গসংগীত পরিবেশন করতে আসলে। এ বাংলা আমার পূর্ব পুরুষের ঠিকানা। আমি বার বার আসতে চাই এখানে। ঢাকায় বড় আকারের উচ্চাঙ্গসংগীতের আসর করছেন লিটু ভাই [আবুল খায়ের লিটু] আপনাদের দাওয়াত রইলো সেখানে’
সম্প্রতি ঢাকার একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে উচ্চাঙ্গসংগীত পরিবেশন করতে এসে কথাগুলো বলেছিলেন পণ্ডি অজয় চক্রবর্তী। সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তার মেয়ে কৌশিকী দেশিকানকে। সেদিন বাবা মেয়ের উচ্চাঙ্গসংগীতের আসর বিমোহিত করেছিল শ্রোতাদের।
আবার শ্রোতাদের সুরের মায়ায় ভাসতে ঢাকায় এসেছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী ও তার মেয়ে কৌশিকী দেশিকান। চারদিনের সংগীত আসরে প্রথম দিন বাবার পরিবেশনা থাকবে। আর দ্বিতীয় দিন রয়েছে মেয়ের পরিবেশনা।
অপেক্ষার পালা শেষ হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর পর্দা উঠতে যাচ্ছে চারদিনের উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের। এ উপমহাদেশের উচ্চাঙ্গসংগীতের ওস্তাদগন মিলিত হতে যাচ্ছেন এক মঞ্চে। নতুন এক রুপে সজ্জিত হয়েছে ঢাকার আর্মি স্টেডিয়াম।
এরই মধ্যে শিল্পীরা এসে জড়ো হচ্ছেন ঢাকায়, কেউ কেউ পথে রয়েছেন। আজ ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ সরণ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন আনিসুজ্জামান। এতে বক্তব্য রাখবেন আইটিসি এসআর এর নির্বাহী পরিচালক রবি মাথুর ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি আবুল খায়ের।
উৎসবের প্রথম দিনটা উৎসর্গ করা হয়েছে ওয়াহিদুল হককে। আজ ২৯ নভেম্বরের আসরে সংগীত পরিবেশন করবেন ওস্তাদ আলী আহমেদ হুসাইন, ওমকার দাদারকার, ওস্তাদ শাহাদাৎ হোসাইন, ওয়াসিম আহমেদ খান, ওস্তাদ শাহিদ পারভেজ, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী প্রমুখ।
সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয়ে সংগীত আসর চলবে রাত ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। পুরো উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে এদেশের সংগীত সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁকে। উৎসবের প্রথম থেকে চতুর্থ দিনটি উৎসর্গ করা হয়েছে ওস্তাদ বিলায়েৎ খাঁ, পণ্ডিত উদয় শঙ্কর, ওস্তাদ আলী আকবর খাঁ ও ওয়াহিদুল হককে।
এ উৎসব চলবে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ঢাকার বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ও কলকাতার আইটিসি এসআর আয়োজনে এ উৎসবে সংগীত পরিবেশন করতে আসছেন বিদুষী গিরিজা দেবী, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা, পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, ওস্তাদ রশিদ খান, পণ্ডিত বিরজু মহারাজ, পণ্ডিত রাজন ও
আয়োজকরা জানিয়েছেন এ উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবে প্রায় ১০০জন সংগীত ও নৃত্যশিল্পী অংশগ্রহণ করবেন।