সরকার বিরোধী কঠোর কর্মসূচি নিয়ে যতোটা গর্জাচ্ছে, ২৮ নভেম্বর ততোটা বর্ষাবে না বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট।
ওইদিনের জনসভায় জোটপ্রধান খালেদা জিয়া কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে গত শুক্রবারও প্রকাশ্য আওয়াজ দিয়েছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু শনিবার জোট নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনই কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে না তারা।
দলীয় সূত্রমতে, দেশব্যাপী স্কুলগুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা ও আরো কিছু প্রাসঙ্গিক কারণে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার সম্ভাবনা কম। এর চেয়ে বরং বিভিন্ন ইস্যুতে ১৮ দলীয় জোটের উদ্যোগে পালন করা নিয়মিত কর্মসূচিগুলো দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ের কর্মসূচিগুলোকে তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়াই আগামী কয়েক সপ্তাহের টার্গেট হতে পারে।
আর এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ২৮ নভেম্বরের জনসভায় বিক্ষোভ, অনশন, অবস্থান ধর্মঘটের মতো গতানুগতিক কর্মসূচিরই পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারেন খালেদা জিয়া।
এমনকি আসতে পারে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট, অনশন ও মানব প্রাচীর কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও। এতে দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা নিজেদের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবে এবং আরো সক্রিয় হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সরকার বিরোধী জোটের হাই কমান্ড।
আর এসবের মাধ্যমে মূলত চলমান ইস্যুগুলোর সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করে সরকারবিরোধী জনমত প্রবল করার পাশাপাশি দল ও জোটের পক্ষে জনসমর্থন বাড়াতেই আগ্রহী বিএনপি প্রধান।
তবে ওই দিনের জনসভায় ব্যাপক সমাবেশ ঘটিয়ে সরকারকে ভড়কে দেওয়ার একটা পরিকল্পনাও আছে ১৮ দলের। এক্ষেত্রে রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের নির্বাচনী এলাকায় দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের শোডাউন পুঁজি করেই বড় সমাবেশ করার ইচ্ছা বিএনপির হাই কমান্ডের।
বরিশালে গত ১৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সমাবেশকে সফল ধরে দারুণ আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা সরকার বিরোধী জোট নেতারা মনে করছেন, ২৮ নভেম্বরের সমাবেশ সফল তো হবেই, উপরন্তু এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে জনগণ ও জোটের মাঠ পর্যায়ের নেতাদের পারস্পরিক সম্পৃক্ততা আরো বাড়বে।
যদিও অপর এক সূত্রের দাবি, পরিস্থিতি বিবেচনায় আসছে ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে এক বা দু’দিনের হরতালও দিতে পারে ১৮ দল। তবে ২৮ নভেম্বরের জনসভায় নয়, সে ঘোষণা দেওয়া হবে পরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে।
নতুন কর্মসূচি প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, “দেশ ও মানুষের স্বার্থ বিবেচনা করেই ২৮ নভেম্বর পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে। জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন হয় এমন কর্মসূচিই দেবেন খালেদা জিয়া।”
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে যা যা করণীয় গণতান্ত্রিক উপায়ে সেসব করা হবে বলেও জানান মাহবুব।