পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের স্বল্প মূলধনী কেম্পানি আলহাজ্ব টেক্সটাইলের শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। গত সপ্তাহে ডিভিডেন্ডের থিউরিটিক্যাল অ্যাডজাস্টমেন্ট হলেও এ শেয়ারের দর বেড়ে কোম্পানিটি টপটেন গেইনার তালিকার ৫ম স্থানে উঠে আসে। সপ্তাহের ব্যবধানে এ শেয়ারের দর বেড়েছে ৭.২৬ শতাংশ। এ শেয়ারের সর্বশেষ দর ৩৮.৪০ টাকা। আর প্রাইস আর্নিং রেশিও (পিই) ১১.০৩ এ অবস্থান করছে।
ডিএসই’র তথ্য মতে, গত ৩০ অক্টোবর সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে আলহাজ্জ্ব টেক্সটাইল। ডিভিডেন্ড ঘোষণার পর শেয়ার দরে ইতিবাচক প্রভাব না পড়লেও ১০ কার্যদিবস পর থেকে অর্থাৎ ১৩ নভেম্বর থেকে অস্বাভবিকভাবে বাড়তে থাকে এ কোম্পানির শেয়ার দর। মাত্র ৬ কার্যদিবসের ব্যবধানে এর দর ৩০.৩০ টাকা থেকে ৩৮.৮০ টাকায় উঠে যায়। এ সময়ের মধ্যে এ শেয়ারের দর বেড়েছে ৮.৫০ টাকা বা ২৮ শতাংশ। আলোচ্য সময়ের মধ্যে একদিন রেকর্ড ডেট এবং ডিভিডেন্ডের থিউরিটিক্যাল অ্যাডজাস্টমেন্ট হয়েছে। সাধারণত থিউরিটিক্যাল অ্যাডজাস্টমেন্ট হলে সে সপ্তাহে কোম্পানি টপটেন লুজার তালিকায় স্থান পায়। তবে এ কোম্পানির বেলায় ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা। দর তো কমেইনি বরং গেইনার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে কোম্পানিটি।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এ কোম্পানির পাশাপাশি আরো কয়েকটি মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি ভালো পরিমান ডিভিডেন্ড ঘোষণা করলেও শেয়ার দরে প্রভাব পড়েনি। অথচ মাত্র ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ডের জন্য এ কোম্পানির দর যেভাবে বেড়েছে তা অস্বাভাবিক। বাজারে দরপতনের ধারায় যখন বেশিরভাগ কোম্পানির দর কমেছে তখন লাগামহীনভাবে বেড়েছে এ কোম্পানির শেয়ার দর।
কোনো চক্র ডিভিডেন্ড ইস্যুতে ফায়দা হাসিল করতে ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে তুলেছে এ শেয়ারের দর। আর স্বল্প মূলধনী হবার কারণে অতি সহজেই তা করতে পেরেছে চক্রটি। এ কোম্পনির মাত্র ৬৬ লাখ ২৩ হাজার ৭৫৮টি শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। সর্বশেষ বাজার দর অনুযায়ী টাকার অংকে যার দর ২৫ কোটি ৪৩ লাখ ৫২ হাজার ৩০৭ টাকা। অর্থাৎ এ পরিমান টাকা হলেই বাজারে লেনদেনযোগ্য এ কোম্পানির প্রায় সব শেয়ার কিনে নেয়া সম্ভব। তাই এ কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন তদন্তের মাধ্যমে সঠিক তথ্য বের করে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
আলহাজ্ব টেক্সটাইল ১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি এবং পরিশোধিত মূলধন ৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। রিজার্ভের পরিমান ৪ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ শেয়ারের ফেস ভ্যালু ১০ টাকা এবং ৫০টিতে মার্কেট লট। কোম্পানির ৯২ লাখ ৩০ হাজার ৪৩২টি শেয়ারের মধ্যে ২৪.০২ শতাংশ পরিচালনা পর্ষদ, ০.০৩ শতাংশ সরকার, ৪.১৯ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ৭১.৭৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। পরিচালকদের সমন্বিত নির্দিষ্ট পরিমান শেয়ার সংরক্ষণ সংক্রান্ত এসইসি’র আদেশ পরিপালনের প্রমান নেই এ কোম্পানিতে।