বিশ্বের প্রধান সব ওয়েবসাইটগুলো যুক্তরাষ্ট্রের পাইরেসি বিরোধী বিলের বিপক্ষে ব্ল্যাকআউট ঘোষণা করেছে। অধিকাংশ ওয়েবসাইটই এই প্রতিবাদের অংশ হিসেবে যার যার ওয়েবপৃষ্ঠা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখছেন।
বুধবার জনপ্রিয় মুক্ত তথ্যকোষের ভাণ্ডার উইকিপিডিয়া তার ইংরেজি ভার্সন বন্ধ রেখেছে এই প্রতিবাদের অংশ হিসেবে।
উইকিপিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস এই ব্ল্যাকআউট সম্পর্কে বলেন, ‘ইন্টারনেটের ভবিষ্যতের জন্য এই বিল হুমকিস্বরুপ।’
প্রতিবাদের ভাষা ব্ল্যাকআউটের সময় উইকিপিডিয়ার ভিজিটররা দেখতে পাবেন শুধুমাত্র কালো এবং সাদা রংয়ের একটি পৃষ্ঠা। যেখানে লেখা আছে ‘এমন একটা বিশ্ব কল্পনা করুন যেখানে জ্ঞান উন্মুক্ত নয়’।
এছাড়াও বিতর্কিত স্টপ অনলাইন পাইরেসি অ্যাক্ট(সোপা) এবং প্রোটেক্ট ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি অ্যাক্ট(পিপা) সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা আছে ওই পাতায়।
উইকিপিডিয়া যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় কংগ্রেস সদস্যদের এই বিলের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।
ওয়েলস জানান, ‘এটা বেশ কদাকার একটা বিল। এ বিল উন্মুক্ত ইন্টারনেটের জন্য বিপদজনক।’
চিজবার্গার নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা বেন হুহ তার টুইট বার্তায় লেখেন, ‘বুধবার মোট ৫৮টি সাইট এই ব্ল্যাকআউটে অংশ নিচ্ছে।’
পিছিয়ে নেই জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলও। গুগল তার হোম পেইজে ‘কংগ্রেসকে বলুন: দয়া করে ওয়েব সেন্সর করবেন না।’ স্লোগান শীর্ষক একটি পিটিশন লিংক দিয়েছে।
অণ্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ সাইট রেড্ডিট বুধবার ১২ ঘণ্টার জন্য তাদের সেবা বন্ধ রেখেছে।
রেড্ডিট থেকে জানানো হয়, ‘অনলাইনে স্বাধীনতা, নতুন ধারা এবং অর্থনৈতিক সুবিধাদি বিপদের মুখে পড়ছে।’
গুগল, ফেসবুকসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় সাইটগুলো এই বিলের বিপক্ষে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এমনটি খোদ যুক্তরাষ্ট্রের হলিউড স্টুডিও এবং সংগীত শিল্পীরা পর্যন্ত এই বিলের বিপক্ষে মতামত প্রদান করছেন।
বলা হচ্ছে প্রস্তাবিত সোপা’র মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেমা, গান এবং অন্যান্য দ্রব্যাদি পাইরেসির হাত থেকে রক্ষা করা হবে।
কিন্তু এর মাধ্যমে দেশের বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রিত সাইটগুলোর ওপরও নেমে আসবে নিষেধাজ্ঞা এবং নিয়ন্ত্রন। শুধু তাই নয় এর ফলে বন্ধ হয়ে যাবে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেওয়া এবং সার্চ ইঞ্জিনগুলোরও কাটতি কমে যাবে। কারণ অর্থের বিনিময়ে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা খুবই কম হবে তখন।
গুগলের এক মুখপাত্র মঙ্গলবার একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমরা এই বিলের বিপক্ষে। কারণ বিদেশি বাজে ওয়েবসাইটগুলোকে বন্ধ করার জন্য অনেক উপায় আছে।’
তবে হোয়াইট হাউস এখনও তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। শনিবার একি বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়, আমাদের বিশ্বাস এই বিল আইনে রুপান্তর হলে ইন্টারনেটে ব্যবসার উন্মুক্ত দ্বার উন্মোচন হবে এবং অবৈধ সাইটগুলোর অত্যাচার থেকে আমরা মুক্ত হতে পারবো।’