প্রায় ২ বছর হতে চললো দেশের পুঁজিবাজারে অস্থিরতা লেগেই আছে। অস্থিরতা থেকে পুঁজিবাজারকে উদ্ধারে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত গত ১৩ জুন বলেছিলেন দুষ্টু বাজারকে সুষ্ঠু করতে ওষুধ আসছে। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর এ ঘোষণার পর ৫ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো বাজারে অস্থিরতা বিরজমান। বরং অর্থমন্ত্রীর এ ঘোষণার সময় বাজার যে অবস্থানে ছিল বর্তমানে তার থেকেও ৩ মাস পিছনে চলে গেছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন অর্থমন্ত্রীর ওষুধ কোথায়?
বিনিয়োগকারীরা বলেন, শেয়ারবাজারের অব্যাহত দর পতন রোধ করতে বাজার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নিজেও বাজারকে স্থিতিশীল করতে নির্দেশ প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় অর্থমন্ত্রী গত ১৩ জুন বাজারের স্থিতিশীলতায় ওষুধ আসছে বলে জানান। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর ঘোষণার পর ৫ মাস পার হয়ে গেছে। তারা বলেন, অর্থমন্ত্রী বাজারকে স্থিতিশীল করতে ওষুধ প্রয়োগ করেছেন নাকি এখনো করেনি।
তারা আরো বলেন, অর্থমন্ত্রী বাজারের স্থিতিশীলতায় যদি ওষুধ প্রয়োগ করে থাকেন তবে কি তা কাজ করছে না, নাকি তিনি আদৌ কোনো ওষুধ প্রয়োগ করেননি?
এ প্রসঙ্গে বিনিয়োগকারী হাফিজুর রহমান বলেন, বাজার স্থিতিশীলতায় অর্থমন্ত্রী যে ওষুধের কথা বলেছেন আসলে তা ছিলো মেয়াদোত্তীর্ণ। মন্ত্রী বাজারের স্থিতিশীলতায় ওষুধ প্রয়োগ করেছেন ঠিকই তবে তা কোনো কাজে আসিনি। তিনি আরো বলেন, অর্থমন্ত্রী বাজারে যে ওষুধ প্রয়োগ করেছেন তা কারসাজিকারীদের ওষুধের চেয়ে নিম্নমানের। তাই মন্ত্রীর ওষুধে কাজ হয়নি।
আরাফাহ রহমান নামে আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, অর্থমন্ত্রীর ওষুধ প্রয়োগের ঘোষণার পর থেকে বাজার আরো অস্থিতিশীল হতে থাকে। এ ঘোষণার মাত্র একমাসের মাথায় সূচক ৪ হাজারের নিচে নেমে আসে। মূলত এ ঘোষণার পর কারসাজিকারীরা বাজারকে আরো অস্থির করে তুলে। যা সামলানোর মতো ওষুধ অর্থমন্ত্রীর কাছে নেই। তিনি বলেন, বাজারকে পুরোপুরি স্থিতিশীল করতে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপের বিকল্প নেই। একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের মাধ্যমেই বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে পারে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, অর্থমন্ত্রীর ওষুধ প্রয়োগের ঘোষণার পর থেকে কারসাজিকারীরা আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। কারসাজিকারীরা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে দিয়ে সূচক পতনে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে তারা বাজার থেকে তাদের প্রয়োজনীয় শেয়ার ক্রয় করে। আবার বাজার উত্থানে তারাই ভূমিকা রাখে। যখন বাজার উত্থানে থাকে তখন তারা তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে বেরিয়ে যায়। আর যখন তারা বাজার থেকে বেরিয়ে যায় তখন আবারও বাজারে পতন প্রবণতা শুরু হয়। এ অবস্থা থেকে বাজারকে স্থির করতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।