জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল কমিউনিস্ট পার্টির ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন দিয়ে। রবিবার বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিজের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাফাই সাক্ষ্য দেয়ার সময় এমনটিই দাবি করেছেন এই জামায়াত নেতা।
দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেয়ার সময় কাদের মোল্লা ট্রাইব্যুনালে বলেন, অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় তিনি ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেন। পরে ইসলাম ও কমিউনিজমের তুলনামূলক পড়াশোনার পর তিনি ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব বুঝতে পারেন এবং ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে ডিগ্রি পড়ার সময় ইসলামী ছাত্রসংঘে (জামায়াতের সাবেক ছাত্র সংগঠন) যোগ দেন। পরে রাজেন্দ্র কলেজ ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন বলে জানান তিনি।
কাদের মোল্লা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদুল্লাহ হলে থাকার সময় একই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলে যোগ দেন বলে সাক্ষ্য দেন এই জামায়াত নেতা।
কাদের মোল্লা বলেন, ১৯৭৯ সালে তিনি ‘সংগ্রাম’ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং ১৯৮১ সালে নির্বাহী সম্পাদক হন।
গত বৃহস্পতিবার থেকে এই মামলায় আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সেদিন প্রথম সাফাই সাক্ষী হিসেবে নিজেই জবানবন্দি দেয়া শুরু করেন আসামি কাদের মোল্লা।
জবানবন্দি দিতে তাকে সাহায্য করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস সোবহান তরফদার। রবিবার জবানবিন্দ দেয়া শেষ করেন তিনি।
নিজের রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে কাদের মোল্লা ট্রাইব্যুনালকে বলেন, ১৯৭১-এ মানবতাবিরোধী যেসব অপরাধের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে সেগুলোর সঙ্গে তিনি জড়িত নন। এর আগে বৃহস্পতিবার তিনি বলেছিলেন, ’৭১ সালে বেশিরভাগ সময় তিনি ঢাকায় ছিলেন না।
এদিকে রবিবার কাদের মোল্লার জবানবন্দি দেয়া শেষ হলে তাকে জেরা শুরু করেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর মোহম্মদ আলী। আগামীকাল সোমবার আবারও জেরাপর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর কাদের মোল্লার পক্ষে মোট ৯৬৫ জন সাফাই সাক্ষীর নামের প্রাথমিক তালিকা আসামিপক্ষ ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়ার পর ৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের অনুমতি দেনট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীর সংখ্যা ছিল ১১ জন। গত ৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষগ্রহণ শেষ হয়।
এর আগে গত ২৮ মে ৬টি অভিযোগে কাদের মোল্লার বিরদ্ধে চার্জ গঠন করেনটাইব্যুনাল। এ ৬টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে কবি মেহেরুন্নেছাসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা, পল্লবীর আলোকদি গ্রামে ৩৪৪ জনকে হত্যা, খন্দকার আবু তালেবকে হত্যা, বাংলা কলেজের ছাত্র পল্লবসহ সাতজনকে হত্যা, কেরানীগঞ্জের শহীদনগর গ্রামের ভাওয়াল খান বাড়ি ও ঘাটারচরসহ পাশের আরো দুটি গ্রামের অসংখ্য লোককে হত্যার অভিযোগ।