আসনের উপনির্বাচনে রবিবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুরো ঘাটাইল নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হয়েছে। ৯৬টি কেন্দ্রের ৫৮৭টি কক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।
কিছুক্ষণ পর পর র্যাব এবং বিজিবি সদস্যদের গাড়ি নিয়ে টহল দিতে দেখা যাচ্ছে। পুরো ঘাটাইলে ৪ হাজার আইনশৃঙ্খলা সদস্য নিয়োজিত রয়েছে।
জেলা রিটার্নিং অফিসার সৈয়দ মো. খুরশিদ আনোয়ার জানান, বিশৃঙ্খলা এড়াতে অতিরিক্ত র্যাব, পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও নির্বাচন তদারকির জন্য অতিরিক্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছেন বলে জানান তিনি।
নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ওয়েব ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সর্ম্পকে র্যাবের নিসিয়র সহ-পরিচালক অভিষেক আহমেদ জাস্ট নিউজকে জানান, টাঙ্গাইল-৩ উপনির্বাচনে পযাপ্ত র্যাব মোতায়েন রয়েছে। যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে র্যাব সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
জানা যায়, এ আসনের ৯৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬৭টিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুপারিশের ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া অন্য কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এ নির্বাচনে মহাজোটের ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এরা হলো আওয়ামী লীগ মনোনীত শহিদুল ইসলাম লেবু (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নাগরিক কমিটির ব্যানারে আমানুর রহমান খান রানা (আনারস) এবং জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সৈয়দ আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ তুহিন (লাঙ্গল)।
নির্বাচনী এলাকার ভোটাররা মনে করেন, এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও নির্বাচনী উত্তাপ কোনো অংশেই কম নয়। তবে নির্বাচনে ভোটের হিসেব-নিকেসে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম লেবু ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমানুর রহমান খান রানার মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তবে জাতীয় পার্টির আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ তুহিন লাঙ্গল প্রতীকে আশানুরূপ ভোট পাবেন বলে তিনি মনে করেন।
টাঙ্গাইল-৩ নির্বাচনী এলাকায় ২ লাখ ৭১ হাজার ৩২৯ ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৩১ হাজার ৭৮৬ পুরুষ ও ১ লাখ ৩৯ হাজার ৫৪৩ মহিলা ভোটার রয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও ১টি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড রয়েছে।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ (শামসুর রহমান খান), ১৯৭৯ সালে বিএনপি ( মো. শওকত আলী ভূঁইয়া), ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগ (শামসুর রহমান খান), ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টি (সাইদুর রহমান খান মোহন), ১৯৯১-১৯৯৬-২০০১ সালে একাধারে বিএনপি (লুৎফর রহমান খান আজাদ) এবং ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ (ডা. মতিউর রহমান) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।