উগ্র জাতীয়তাবাদী ও ধর্মীয় উগ্রবাদীরাই মিয়ানমারের সাম্প্রতিক দাঙ্গার জন্য দায়ী। দেশটির প্রেসিডেন্ট থিয়েন সেইন শুক্রবার রাতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের উদ্যোগে বৌদ্ধ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ কথা বলেন। ওই সংঘাতের পেছনে কয়েকটি বিদেশি সংস্থা ও রাষ্ট্র জড়িত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মিয়ানমারের মুসলিম রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধ রাখাইনদের মধ্যে কয়েক মাস ধরে চলা জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এ বৈঠকের আয়োজন করে। এ ছাড়া জাতিসংঘে পাঠানো এক চিঠিতেও তিনি এসব কথা উল্লেখ করেন। থিয়েন সেইনের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ জানিয়েছে, দাঙ্গার মূল কারণ উদঘাটনের জন্য তদন্ত করবে সরকার। চলতি বছরের ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী ওই দাঙ্গায় কমপক্ষে ৮৯ জন নিহত হয়। আহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। বাড়ি ছাড়া হয়েছে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। বৈঠকে সেইন বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী ও ধর্মীয় উগ্রবাদীরা ওই অঞ্চলে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। তারা অন্তরালে থেকে দাঙ্গার প্রচারণা চালিয়ে ইন্ধন যুগিয়েছে।’ নির্দিষ্ট কারও নাম উল্লেখ না করে প্রেসিডেন্ট সেইন বলেন ‘এসবের পাশাপাশি, কিছু বিদেশি সংগঠন অতিরঞ্জিত খবর প্রচার করে দাঙ্গা আরও উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। বক্তব্যে তিনি সরকার, বৌদ্ধ ভিক্ষু ও অন্যান্য জাতি ও ধর্মের অনুসারীদের সমন্বয়ে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একটি সহনশীল সমাজ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মিয়ানমার সফরের তিন দিন আগে রোহিঙ্গা-রাখাইন দাঙ্গার বিষয়ে প্রথমবারের মতো স্পষ্ট বক্তব্য দিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া ওবামার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিনটি দেশ সফরের অংশ হিসেবে আগামী সোমবার ওবামার মিয়ানমার যাওয়ার কথা রয়েছে। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গারা সংখ্যায় কম। রাখাইনরা বেশি। ওই দাঙ্গা নিয়ে রয়টার্সের চালানো এক তদন্তে দেখা যায়, রাখাইন রাজ্যের একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্কিত রাখাইন জাতীয়তাবাদীরা রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যন্ত পরিকল্পিত আক্রমণ পরিচালনা করে। ওই জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে বৌদ্ধ ভিক্ষু ও স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও জড়িত ছিল। মিয়ানমারের এমআরটিভি জানিয়েছে, দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮১ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রয়টার্স।