ব্যাংকের মতো নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন থেকে ক্যামেলস রেটিংয়ের আওতায় আসছে। বর্তমানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক পারফরম্যান্স মূল্যায়ন রেটিংয়ের নাম ‘ক্যামেল’। কিন্তু এখন ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে কতিপয় বিষয় সংযোজনের মাধ্যমে নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতির নাম দেয়া হচ্ছে ক্যামেলস।
জানা গেছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সার্বিক রেটিংয়ের সঙ্গে ‘বাজার ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতা’ বা ‘সেনসিটিভিটি টু মার্কেট রিস্ক’ সূচক যোগ হবে। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের রেটিংয়ের নামও ব্যাংকের মতো ‘ক্যামেলস’ হবে। এজন্য নতুন নীতিমালা তৈরী করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খুব শিগগিরই এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ছিল ৫০ কোটি টাকা। চলতি বছর থেকে তা বাড়িয়ে ১০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। আর্থিক ভিত্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের বাজার ঝুঁকিও বাড়ছে। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বাজার ঝুঁকিকেও এখন থেকে বিবেচনায় নেয়া হবে।
এর আগে গত অক্টোবরে প্রথমবারের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মানি লন্ডারিং বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মূলত আর্থিক ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি পরিমাপের আওতা বাড়ানো হচ্ছে।
ক্যামেলস রেটিং হলো ব্যাংকের স্বাস্থ্য পরীক্ষার মতো। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতি ৬ মাসের আর্থিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি দেখে সম্মিলিত রেটিং দেয়া হয়। ক্যামেলস রেটিংয়ের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম বা ১ থেকে অসন্তোষজনক বা ৫ পর্যন্ত রেটিং দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গুরুত্বপূর্ণ সূচকের আদ্যাক্ষর দিয়ে ‘ক্যামেলস’ শব্দটি তৈরি হয়েছে। যেমন মূলধন পর্যাপ্ততা বা ক্যাপিটাল এডিকুয়েসির ‘সি’ , সম্পদের গুণগত মান বা অ্যাসেট কোয়ালিটির ‘এ’, ব্যবস্থাপনা বা ম্যানেজমেন্টের ‘এম’, উপার্জন বা আর্নিংস এর ‘ই’, তারল্য পরিস্থিতি বা লিকুইডিটির ‘এল’ এবং ‘বাজার ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতা’ বা ‘সেনসিটিভিটি টু মার্কেট রিস্ক’ এর ‘এস’।
আগে ‘বাজার ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতা’ সূচকটি ব্যাংকের ক্ষেত্রেও ছিল না। শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সূচক যোগ করা হয়। আর এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও সূচকটি যোগ হচ্ছে। আগামী বছর থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও এই ঝুঁকি বিবেচনায় নেয়া হবে।