সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নির্দেশনা অনুসারে অমনিবাসের অধীনে থাকা অ্যাকাউন্টগুলো পৃথক বেনিফিসিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবে রূপান্তরের জন্য সফটওয়্যার তৈরী করবে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট। নির্মানাধীন এসইসি’র সাভিল্যান্স সফটওয়্যার অমনিবাস অ্যাকাউন্টগুলো পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম না হওয়ায় এ সফটওয়্যার তৈরী করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের আইটি বিভাগ প্রতিটি গ্রাহকের জন্য আলাদা বিও হিসাব খোলার জন্য সফটওয়্যার নির্মাণের কাজ শুরু করেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, দেশে প্রায় এক লক্ষাধিক গ্রাহক মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করে থাকে। কিন্তু, এসব হিসাব ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) তদারকি করতে পারে না। এ কারণে ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি এসব অ্যাকাউন্টকে ভূতুড়ে অ্যাকাউন্ট হিসেবে আখ্যায়িত করে। আর তাই এই ভূতুড়ে অ্যাকাউন্টগুলোকে পৃথক বিওতে রুপান্তর করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মসিউর রহমান বলেন, অমনিবাস অ্যাকাউন্ট বিও হিসাবে রূপান্তর করার জন্য আমাদের আইটি বিভাগ একটি সফটওয়্যার নির্মান করছে। এতে অটোমেটিকভাবে সব অ্যাকাউন্ট বিও হিসাবে রূপান্তর করা যাবে। আর আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ সফটওয়্যার তৈরী করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ বলেন, অমনিবাস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দেড় লাখের মত গ্রাহক লেনদেন করে থাকেন। এসব অ্যাকাউন্ট ম্যানুয়ালি বিও হিসাবে রূপান্তর করা সময়সাপেক্ষ। আর এ কারণেই একটি সফটওয়্যার তৈরী করা হচ্ছে। আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট এ কাজটি করছে।
জানা গেছে, আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে সকল অমনিবাস অ্যাউন্টকে পৃথক বিও হিসাবে রূপান্তর করার নির্দেশ দিয়েছে এসইসি। আর পৃথক বিও হিসাব খোলার ক্ষেত্রে বিএমবিএ’র পক্ষ থেকে যে সকল সুযোগ সুবিধা চাওয়া হয় তা মেনে নেয় এসইসি। এসইসি’র নির্দেশনার প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে বিএমবিএ’র নির্বাহী কমিটির বৈঠকে অমনিবাস অ্যাকাউন্ট ভাঙ্গার বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অমনিবাসের মধ্যে থাকা অ্যাকাউন্টগুলো ভাঙ্গতে সফটওয়্যার তৈরী করা।
প্রসঙ্গত, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অমনিবাস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করে আসছে। এর আগে ২০০৮ সালে দেওয়া এসইসি’র এক নির্দেশনায় অমনিবাস অ্যাকাউন্টের আন্ডারে থাকা গ্রাহকের হিসাবগুলোকে পৃথক বিও হিসাবে রূপান্তরের নির্দেশ দিলেও গত ৪ বছর ধরে তা করেনি মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো। উপরন্তু প্রতিটি গ্রাহকের জন্য বিও হিসাব খোলায় নানা বাধা বিপত্তি তুলে ধরা হয় এসইসি’র কাছে। তবে সর্বশেষ মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এটি বন্ধ করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এসইসি।