পালমেইরাসের বিপক্ষে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা ফ্রেডের জোড়া গোলের সুবাদে তিন ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা ঘরে তুলেছে ফ্লুমিনেন্স। রোববার পালমেইরাসকে ৩-২ গোলে হারিয়ে তিন মৌসুমে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো দলটি।
খেলার অন্তিম মুহূর্তে (৮৮ মি.) জয়সূচক গোল করে ১৯৭০, ১৯৮৪ ও ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়নদের চতুর্থ লিগ শিরোপা এনে দেন ফরোয়ার্ড ফ্রেড।
তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও সমতায় ফিরেছিলো আট বারের লিগ চ্যাম্পিয়ন পালমেইরাস। কিন্তুু মিডফিল্ডার জিয়ানের ক্রসে করা ফ্রেডের শেষ মুহূর্তের গোলে জয় ছিনিয়ে আনে ফ্লুমিনেন্স। লিগে এই স্ট্রাইকারের ১৯তম গোল। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাও পাওলোর লুই ফ্যাবিয়ানোর চেয়ে তিন গোলে এগিয়ে আছেন ২০০৬ এর বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের এই খেলোয়াড়।
প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে দলকে প্রথম এগিয়ে দিয়েছিলেন ফ্রেড। সতীর্থ ওয়েলিংটন নেমের শট পালমেইরাসের গোলরক্ষক ব্রুনোর থেকে রিবাউন্ড হলে ফিরতি বলে নিশানাভেদ করেন ২৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড (১-০)। ৫৪ মিনিটে দলকে দ্বিতীয় গোলও উপহার দেন তিনি। ফ্রেডের শট পালমেইরাসের পোস্টে প্রতিহত হলে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন ডিফেন্ডার মরিসিও রামোস (২-০)। তবে সমতায় ফিরতে বেশি সময় নেয়নি পালমেইরাস। ৬১ মিনিটে আর্জেনিটনা স্ট্রাইকার হের্নান বারকোস ও ৬৫ মিনিটে মিডফিল্ডার প্যাট্রিক ভিয়েইরার গোলে ২-২ গোলে ম্যাচে ফেরে সাবেক লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
রোববার ফ্লুমিনেন্সের শিরোপা উদযাপন সম্ভব হতো না যদি না দিনের অপর ম্যাচে ভাস্কো দা গামার বিপক্ষে জয় পেতো রোনালদিনহোর ক্লাব অ্যাটলেটিকো মিনেইরো। ভাস্কোর সঙ্গে মিনেইরোর ১-১ গোলের ড্র’য়ে কয়েক ম্যাচ বাকি থাকতেই শিরোপা উৎসব করে ফ্লুমিনেন্স। ক্লাবটির এখন নতুন লক্ষ্য লিগে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনের রেকর্ড গড়া। ২০০৬ সালে ২০টি দল নিয়ে প্রবর্তিত এই লিগে সর্বোচ্চ ৭৮ পয়েন্ট পেয়ে শিরোপা জিতেছে সাও পাওলো। কিন্তু তিন ম্যাচ হাতে রেখেই ফ্লুমিনেন্সের বর্তমান সংগ্রহ ৭৬।
লিগের বর্তমান মৌসুমে এ পর্যন্ত ২২ ম্যাচে জয় পেয়েছে ফ্লুমিনেন্স। বিপরীতে ১০টি ড্র ও গ্রেমিও, অ্যাটলেটিকো মিনেইরো ও রেলিগেশনের শিকার অ্যাটলেটিকো গোয়াইনিয়েন্সের বিপক্ষে মাত্র তিন ম্যাচে হেরেছে তারা।
লিগ জয়ী ফ্লুমিনেন্সের কোচ অ্যাবেল ব্রাগা বলেন,‘এমন সফল শিরোপা মিশনের পর আমাদের এই চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে সমালোচনার জন্য খুব কম লোকই পাওয়া যাবে।’ ব্রাগাার দলে এবার একঝাঁক তারকার সমাবেশ ঘটেছিলো। তাদের মধ্যে ছিলেন চেলসি প্লেমেকার ডেকো, ব্রাজিল মিডফিল্ডার থিয়াগো নেভেস, কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড এডউইন ভ্যালেন্সিয়া, রিয়াল বেটিসের সাবেক ফরোয়ার্ড রাফায়েল সবিস এবং লিভারপুলের সাবেক রিজার্ভ গোলরক্ষক দিয়েগো ক্যাভারিয়েরি।
এদিকে অ্যাটলেটিকোকে ১৯৭১ সালের পর প্রথমবারের মতো ব্রাজিলিয়ান লিগ শিরোপা জয়ের স্বাদ দিতে এবার ক্লাবটিতে নাম লিখিয়েছিলেন রোনালদিনহো। কিন্তু বিধিবাম। রোববারের ড্রয়ে তারা পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থান থেকে তৃতীয়স্থানে নেমে যায়। দিনের অন্য ম্যাচে গ্রেমিও ২-১ গোলে সাও পাওলোকে হারানোয় তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে উঠে আসে।
ম্যাচ শেষে হতাশ রোনালদিনহো বলেন,‘দুভার্গ্যজনকভাবে শিরোপা এখন আমাদের নাগালের বাইরে। আমাদের এখন যেটা করণীয় সেটা হচ্ছে ভালভাবে লিগ শেষ করা।’