মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় অভিযোগ যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত

মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় অভিযোগ যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত

 

আলোচিত শেয়ার ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম ও শামীমা শরীফের প্লেসমেন্ট শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত আইন ভঙ্গের প্রমাণ না পেয়ে মানিলন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। শুধু তাই নয়, এসইসি সম্প্রতি এই বিষয়টি মানি লন্ডারিংয়ের আওতায় পড়ে কিনা তা পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট বিভাগে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রে আরো জানা যায়, এসইসির গত ৪৪৪তম নিয়মিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যদিও বিষয়টি এসইসি’র ওয়েবসাইটে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওই সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, সার্ভিল্যান্স বিভাগ কর্তৃক পেশকৃত কার্যপত্রের ওপর সার্বিক বিবেচনাপূর্বক আবদুস সালাম ও শামীমা শরীফের শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদনে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের কোনো প্রমান পাওয়া যায়নি। কমিশনের উল্লিখিত সিদ্ধান্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থমন্ত্রনালয়কে অবহিত করা হবে।

ড. ইব্রাহীম খালেদের পুঁজিবাজার তদন্ত প্রতিবেদন ২০১১ অনুসারে জানা যায়, অধ্যায় ৫-এর ২০ নং নমুনায় প্লেসমেন্ট তালিকা পরীক্ষাকালে দেখা গেছে, কয়েকটি নাম ঘুরে ফিরে বারবার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শেয়ার প্লেসমেন্ট পেয়েছে। যেমন- (ক) আহসান ইমাম KPCL এর বিশাল অংকের শেয়ার ক্রয় করেছেন এবং EBL মিউচুয়াল ফান্ডের ২ কোটি টাকার প্লেসমেন্ট পেয়েছেন। (খ) লুৎফর রহমান বাদলের স্ত্রী সোমা আলম রহমান এই ফান্ডে ৩ কোটি টাকার প্লেসমেন্ট পেয়েছেন। (গ) কিউ এম শরীফুল আলা প্রধান নির্বাহী হয়েও DBH ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ১.৫০ কোটি টাকার প্লেসমেন্ট নিয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য নামের মধ্যে রয়েছেন শামিমা শরীফ, আনজারা ফাইজা শরীফ, মেহেদি হাসান খান, মাসুদ পারভেজ, হাসানাত দৌলা, মনসুর বিল্লাহ, ফারজানা আখতার, সৈয়দ ফাতেমী আহমদ রুমী, মোহাম্মদ আল মারুফ খান, লুৎফর রহমান বাদল, আব্দুস সালাম, পীমা ইমাম, প্রমুখ। নমুনা মিউচুয়াল ফান্ডগুলো হলো, DBH 1st, গ্রিণ ডেল্টা, IFIL 1st, EBL 1st, Popular Life 1st, Phoenix 1st, IFIC Mutual, ICB AMCL 3rd, প্রভৃতি।

এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনের দুর্নীতি চিত্র-৩ এ : মোঃ আবদুস সালাম লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডে অমনিবাস (শ্যাডো) অ্যাকাউন্টে শেয়ার ব্যবসা করেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান শাখায় ০২১৬-০১-০০০০৩৩০ নং হিসাব পরিচালনা করেন। এরপর পৃষ্ঠা ১৫-তে তিনি ১৩/৪/২০১০ তারিখে চেক নং ৮৭৮৩৮০৭ এবং ৮৭৮৩০৬-এর মাধ্যমে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা জমা করেন এবং ১৫/৪/২০১০ তারিখে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে পে-অর্ডার মারফত ২ কোটি টাকা জিএমজি এয়ারলাইন্স লিমিটেডকে প্রদান করেন। সম্ভবত: এই টাকা GMG কোম্পানিকে প্লেসমেন্ট বাবদ দেয়া হয়ে থাকতে পারে, যদিও GMG এখনও IPO অনুমতি পায়নি। GMG এয়ালাইন্সের সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন, শেয়ারমূল্য নির্ধারণ, প্লেসমেন্ট, আইপিও ইত্যাদি বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ও সুশীল সমাজে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে, অতএব কমিটির মতে, SEC পুনর্গঠিত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে বিশদ তদন্ত হতে পারে। কেসটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের একটি ক্ষুদ্র ইঙ্গিতবহ তথ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

অর্থ বাণিজ্য