বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেকের যুগপূর্তি হলো আজ। এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) অনারম্বর এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মিরপুরে বিসিবি কার্যালয়ে অভিষেক টেস্ট দলের সদস্য ও প্রাক্তন অধিনায়কদের নিয়ে কেক কেটে টেস্টের যুগপূর্তি উৎযাপন করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
আয়োজনটা ছিল নিতান্তই সাদামাটা। কারণটা সভাপতির বক্তব্যে ভেঙ্গে বললেন নাজমুল হাসান পাপন। ‘আজ যে বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেকের যুগপূর্তি হচ্ছে, এই ব্যাপারটা আমার খেয়াল ছিল না। দু’দিন আগে কয়েকজন সাংবাদিক আমাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করেন। তখনই ব্যাপারটা আমার মনে পড়ে। এরপর অভিষেক টেস্ট দলের সদস্য ও প্রাক্তন অধিনায়কদের সঙ্গে দিনটি স্মরণ করার তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেই।’
তবে এমন সাদামাটা আয়োজনে মোটেও অখুশি নন অভিষেক টেস্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা নাইমুর রহমান দুর্জয়। কেক কাটার পর বললেন, ‘যুগপূর্তি উপলক্ষ্যে যে ঘরোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন বিসিবি করেছে, সেজন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত। কারণ এই ধরনের ব্যয়বহুল অনুষ্ঠান না করে, ওই অর্থ ক্রিকেটের জন্য ব্যয় করা হোক। সেটা হলে আমি আরও বেশি তৃপ্তি পাব।’
হঠাৎ করে অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করায় ১২ বছর আগে ১০ই নভেম্বর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়া অভিষেক টেস্ট দলের সব সদস্যকে এক করা যায় নি। দেশের বাইরে থাকায় প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৪৫ রান করা ব্যাটসম্যান আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও আল শাহরিয়ার রোকনকে পায় নি বিসিবি।
তবে অভিষেক টেস্ট দলের অন্য সদ্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন প্রাক্তন অধিনায়কেরাও। ছিলেন বর্তমান জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ ও ইলিয়াস সানিও।
অনুষ্ঠানে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বাংলাদেশের টেস্ট স্টাটাস পাপ্তিকে অনেক বড় অর্জন বলে অভিহিত করেন। একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেন যে ১২ বছরের টেস্ট যাত্রায় বাংলাদেশ যতদূর যাওয়ার কথা ছিল, ততদূর যেতে পারে নি।
ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টির মতো টেস্ট ক্রিকেটকে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিতে না পারাকে টেস্টে বাংলাদেশের অনগ্রসরতার প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেন বিসিবি সভাপতি। তবে টেস্ট ক্রিকেটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সব ফরম্যাটের ক্রিকেটেই বাংলাদেশকে সাফল্যমন্ডিত করতে চান তিনি। এক্ষেত্রে অভিষেক টেস্ট খেলা সদস্যসহ অন্যান্য প্রাক্তন ক্রিকেটারদের সহযোগিতা চান বিসিবি সভাপতি।
‘লংগার ভার্সনের জন্য যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দরকার ছিল তা আমরা দিতে পারি নি। এটা আমাদের ব্যর্থতা নয়। কারণ আমাদের সীমিত রিসোর্স দিয়ে ক্রিকেটের দীর্ঘ ও সংক্ষিপ্ত উভয় ভার্সনকে সাপোর্ট করা সম্ভব ছিল না। আমরা সেজন্য সংক্ষিপ্ত ভার্সনে আমাদের রিসোর্স ব্যবহার করেছি এবং এর সুফলও পাচ্ছি। এখন আমাদের লক্ষ্য লংগার ভার্সনের দিকে মনোযোগ দেওয়া।’ যুগপূর্তি অনুষ্ঠানের পর বলেন বিসিবি সভাপতি।
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ১২ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান প্রাক্তন ক্রিকেটারদের একসঙ্গে হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন সাবেক অধিনায়ক অলরাউন্ডার খালেদ মাহমুদ সুজন। অনেকদিন পরে পুরনো সতীর্থকে কাছে পেয়ে আড্ডায় মেতে ওঠেন সাবেক ক্রিকেটাররা।