পিপিডি সচিবালয় নির্মাণে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

পিপিডি সচিবালয় নির্মাণে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেছেন, পার্টনার্স ইন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (পিপিডি) সচিবালয় তৈরির জন্য রাজধানীতেই ৬৪ শতাংশের একটি জমি বরাদ্দ এবং অন্য সকল সহযোগিতা দিচ্ছে।

পিপিডি সচিবালয় নির্মাণে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সাহায্যও দেবে সরকার। এ ভবন নির্মাণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সকল ধরনের সহযোগিতা করবে।

শনিবার সকালে রাজধানীর হোটেল রূপসী বাংলায় পিপিডি ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে ‘এভিডেন্স টু অ্যাকশন: সাউথ-সাউথ কোলাবোরেশন ফর আইসিপিডি বিয়োন্ড ২০১৪’ শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সাউথ-সাউথ সহযোগিতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং অন্য সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারিত্বে কাজ করতে বিশ্বাসী।এ জন্যে একটি টাস্কফোর্সও গঠন করা হয়েছে, যা বর্তমানে দু’টি প্রকল্প পরিচালনা করছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরাও এ ইস্যুতে কাজ করছেন স্বত:স্ফূর্তভাবে।

বাংলাদেশ সাউথ-সাউথ সহযোগিতামূলক প্রকল্পগুলোতে সক্রিয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিনিময় করছে। দক্ষতা বৃদ্ধিতেও প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কার্ক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

সাউথ-সাউথ সহযোগিতার প্রচারণার ফলে বাংলাদেশ ২০১১ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত সাউথ-সাউথ পুরস্কার গ্রহণ করেছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্নে দেশের তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ১২ হাজার স্থাপন করেছে। একটি ক্লিনিক থেকে ৬ হাজার রোগীকে সেবা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। এসব ক্লিনিকে জনগণের অংশীদারিত্ব রয়েছে এবং এগুলো মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবায় ভূমিকা রাখছে।

গত ১০ বছরে দেশে মাতৃমৃত্যুহার ৪০ শতাংশ কমেছে। ২০০১ সালে দেশে মাতৃমৃত্যুহার ছিল ৩২২, ২০১০ সালে তা ১৯৪তে এসে কমেছে। বাংলাদেশে এমডিজি-৫ অর্জনের প্রাথমিক লক্ষ্যে কাজ করছে।

এ ধরনের সম্মেলনের মাধ্যমে সাউথ-সাউথ সহযোগিতার সদস্য দেশগুলোর মন্ত্রীদের মধ্যে কাজের সুযোগ আরো বাড়বে।

তিনি বলেন, রিও+২০ সামিটের প্রস্তুতি হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় ঘোষিত ‘প্রিটোরিয়া ঘোষণা’ বড় ভূমিকা রেখেছে। এবারের সম্মেলনে নেওয়া ঘোষণা ২০১৫ সালের মধ্যে এমডিজি অর্জনে বড় ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, জাম্বিয়ার নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহ-সভাপতি আজারাতৌ ইসাতৌ জি সেইডি, বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী গোলাম নবী আযাদ এবং চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কমিশনের প্রতিমন্ত্রী চেন লি।

২ দিনের এ সম্মেলনে ভারত, চীন, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে, মালিসহ ২৫টি দেশের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করছেন।

এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে উন্নয়নশীল ২৫টি দেশের মন্ত্রীরা ২০১৫ সাল পরবর্তী জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০১৪ সাল পরবর্তী আইসিপিডি কর্মসূচির অঙ্গীকার ও জনসংখ্যার উন্নয়নে জাতীয় পর্যায়ে আরো সাবলীল কর্মপদ্ধতি গ্রহণের ঘোষণা দেবেন বলে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালের ৫-১৩ সেপ্টেম্বর মিশরের কায়রোয় ১৭৯টি দেশের মন্ত্রীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক জনসংখ্যা ও উন্নয়ন সম্মেলনে (আইসিপিডি) পরবর্তী ২০ বছরের জন্য আইসিপিডি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়- যা ২০১৪ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ