আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে বের করার আল্টিমেটাম দিয়েছেন মহাজোটের নেতারা। অন্যথায় সারাদেশে তাদের (বিএনপি-জামায়াত) বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
শুত্রুবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে যুব সমাজ সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত ‘জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘোষণা দেন মহাজোটের নেতারা।
তারা বলেন, “ভারত সফর করে খালেদা জিয়া নিজেদের অসাম্প্রদায়িক দাবি করেছেন। আর দেশে ফিরে তাদের দোসর জামায়াত-শিবিরকে লেলিয়ে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি আবারো প্রমাণ করেছেন- সাম্প্রদায়িক চিন্তা তার মাথা থেকে এখনো বের হয়নি।”
খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্য তারা বলেন, “আপনার জোট থেকে সাম্প্রদায়িক শক্তি জামায়াতকে বের না করলে সারাদেশে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আর এ জন্য আপনাকে দায়ী থাকতে হবে।”
প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, “গত চারদিন ধরে জামায়াত-শিবির সারাদেশে যে সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে তার জন্য বিএনপি দায়ী। তাদের একক শক্তিতে কোন দিন তারা এতো বড় ঘটনা ঘটাতে পারতো না। এজন্য বিএনপিকে একদিন জবাবদিহি করতে হবে।”
তিনি বলেন, “এখন থেকে যে শহর, জেলা, উপজেলা, গ্রাম, মহল্লায় জামায়াত-শিবিরকে পাবেন, সেখানেই তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করবেন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করবেন।”
তিনি বলেন, “জামায়াত-শিবির আবার সারাদেশে যে সাম্প্রদায়িক বীজ বপন করতে চাচ্ছে তা প্রতিরোধ করতে হবে। সহিংসতার মাধ্যমে তারা আবারো প্রমাণ করেছে- তার মানবতার ও সমাজের শত্রু। তারা আবারো নিজেদের দেশদ্রোহী, সমাজদ্রোহী প্রমাণ করেছে।”
সারাদেশের ১ হাজার ৪শ’ জামায়াত-শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য।
মহাজোটের শরিক ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “জাতিকে যখন কলঙ্কমুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে ঠিক তখন সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো বেপোরোয়া হয়ে উঠছে।”
জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার প্রশ্নে সবাইকে এ মূহুর্তে এক সারিতে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মেনন বলেন, “জামায়াত-শিবিরের এই নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিএনপির নীরবতা মানে কী? তারা কেন এ ঘটনার প্রতিবাদ করলো না? এ অবস্থায় ঘরে বসে থাকলে হবে না। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, প্রতিহত করার কাজে নামতে হবে।”
তিনি বলেন, “নির্বাচনের সময় যতই এগিয়ে আসছে, জামায়াত-শিবিব তাদের কার্যকলাপ ততই বাড়িয়ে চলেছে। সারাদেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।”
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, “জামায়াত-শিবিরের কার্যকলাপে পুলিশ প্রশাসন নমনীয় থাকবে তা মেনে নেওয়া যাবে না। পুলিশের ভেতরে জামায়াত-শিবিরের এজেন্ডদের খুঁজে বের করতে হবে। জামায়াত-শিবিরের এই সহিংস কার্যকলাপের পর যারা নমনীয় ছিলেন সেসব এসপি, ওসিসহ তাদের বিষয়ে তদন্ত করা দরকার। ছাত্রজীবনের তারা কী করেছেন। তাদের তালিকা করে হেড অফিসে পাঠাতে হবে।”
ওমর ফারুক বলেন, “পুলিশের আইজি, ডিআইজি তাদের নিরীহ (পুলিশ) সদস্যদের হাতে লাঠি দিয়ে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সহনশীল আচরণ করতে বলছে, সহশীল আচরণ করতে গিয়ে এখন তারা মরণশীল হয়েছে মার খেয়ে।”
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় যুব ঐক্যের সভাপতি খাইরুল আলম, যুব-আন্দোলনের সভাপতি মোশায়েত আহমেদ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড সভাপতিরা।