মতিঝিলে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষ, আগুন

মতিঝিলে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষ, আগুন

মতিঝিলে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় জামায়াতের অন্তত ১০ কর্মীকে আটক করা হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে ইত্তেফাক মোড়, মতিঝিল শাপলা চত্বর ও পুরানা পল্টন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা একটি বিআরটিসি বাস, একটি পুলিশ ভ্যান ও দৈনিক বাংলার মোড়ে একটি, জনতা ব্যাংকের সামনে ৩টি, সিটি সেন্টারের সামনে একটি, আলিকো বিল্ডিংয়ের সামনে ২টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় পুলিশের সদস্যসহ জামায়াত-শিবিরের বেশকজন কর্মী আহত হয়। আটক এক কর্মীকে রক্তাত্ব অবস্থায় নিয়ে যেতে দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল  বের করে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সামনে এসে  শেষ হয়। সেখানে রাস্তায় সমাবেশ শুরু করে নেতাকর্মীরা।

এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের  শেল ছোড়ে। এতে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে এলোপাতাড়ি ভাঙচুর ও ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। বিভিন্ন অলিগলিতে জামায়াত নেতাকর্মীরা ঢুকে পড়ে সেখান থেকে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ তাদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুরো এলাকা শান্ত করে। এ সময় প্রায় দুই ঘণ্টা পুরো এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকে।

মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত  কর্মকর্তা এ সম্পর্কে জানান, পুলিশ উচ্ছৃঙ্খল কয়েকজন জামায়াত কর্মীকে আটক করেছে। তবে কতজনকে আটক করা হয়েছে তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।

সেখানে পুলিশের বর্তমান অবস্থান নিয়ে জানতে চাইলে মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জাস্ট নিউজকে বলেন, আমরা এখনো সতর্কাবস্থায় রয়েছি। কোনোভাবেই বিশৃঙ্খলা মেনে নেয়া হবে না। যাতে পরবর্তীতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য আমরা তৎপর রয়েছি।

রমনা বিভাগের পুলিশের সহকারী কমিশনার শিবলী  নোমান জাস্ট নিউজকে বলেন, অনুমতি ছাড়া আসর নামাজের পর জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা হঠাৎ মিছিল শুরু করে। একপর্যায়ে তারা পুলিশকেও জিম্মি করে ফেলে। এ সময় পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়। পরে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।

উল্লেখ্য, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ দলটির শীর্ষ নয় নেতা ও কারাগারে আটক সব রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে রবিবার আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ৫ নভেম্বর সব মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ এবং ৬ থেকে ১৩ নভেম্বর  দেশব্যাপী গণসংযোগ।

জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার দাবি করে বলেন, জামায়াত নেতারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে সরকার আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুসরণ করছে না।

অন্যদিকে, এ সংঘর্ষের জন্য পুলিশকে দায়ী করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলের ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আজাদ এমপি জাস্ট নিউজকে বলেন, এ ঘটনার জন্য পুলিশ দায়ী। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। এ সময় পুলিশ আমাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে এবং লাঠিপেটা শুরু করে।

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ জাস্ট নিউজকে জানান, আজকে আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ বিনা উস্কানিতে বাধা দেয়। পুলিশ মিছিল থেকে জামায়াত-শিবিরের প্রায় ৩০ নেতাকর্মীকে আটক করে বলে তিনি দাবি করেন।

বাংলাদেশ রাজনীতি