জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দাবি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার আন্দোলনকারী নেতাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ফলপ্রসূ আলোচনার ভিত্তিতে উন্নয়ন ফি ৫ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, এদিন সন্ধ্যা ৬ টায় উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উন্নয়ন ফি ৫ হাজার টাকার মধ্যে ২ হাজার টাকা কমিয়ে ৩ হাজার টাকা করে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
অবশিষ্ট তিন হাজার টাকা আগামী ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে কমাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি’র সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবেন উপাচার্য।
একই সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কারণ দর্শানো নোটিশ প্রত্যাহারের জন্য অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আবেদন করবেন বলেও আন্দোলনকারীরা মেনে নেন।
বৈঠকে আন্দোলনকারীদের জানানো হয় যে, আগামী ২৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ২৭/৪ ধারা উত্থাপনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সেইসঙ্গে ক্যাম্পাসে সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে আন্দোলনকারী প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতারা আন্দোলনের সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হাসনা হেনা, প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদ, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের জবি শাখার সভাপতি ফারুক আহমেদ আবির, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক শরিফুল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর আহ্বায়ক সৌরভ মন্ডল এবং ছাত্র ফেডারেশনের মো. নাজমূল জামান, আন্দোলনরত সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে মাকসুদা আক্তার মিশু প্রমুখ প্রতিনিধিত্ব করেন।
এ বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়নের জবি শাখার সভাপতি ফারুক আহমেদ আবির বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নেওয়ায় আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। দাবি মেনে নেওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হলো যৌক্তিক দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন কখনও বৃথা যায় না। সমস্ত অর্জন আন্দোলনের মধ্য দিয়েই হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যাদ্যালয় ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী বলেন, আন্দোলনকারী ছাত্রদের সাথে তাদের দাবি নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।এতে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যায় প্রশাসনের এমন ঘোষণার ফলে অনেক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী নিলীমা খান বলেন,২ হাজার টাকা কমানোর ঘোষণা আমার দরিদ্র বাবার জন্য কম নয়।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ফি ৫০০০ টাকা প্রত্যাহার, ২৭/৪ ধারা বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আইনি স্বীকৃতি, আন্দোলনকারী ছাত্রদের শোকজ আদেশ প্রত্যাহার, ক্যাম্পাসে সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে গত বেশ কয়েক দিন ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছিল।
এর আগে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে তারা।
রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে আগামীকাল সোমবার ছাত্র ধর্মঘটসহ ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল আন্দোলনকারীরা।