যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানল আরো ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাতাসের তীব্রতা বাড়তে থাকায় আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। এরই মধ্যে দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে, নিখোঁজ রয়েছে ১৬ জন। তাদের মধ্যে ইটনের দাবানলে ১১ জন এবং প্যালিসেডসের দাবানলে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের দমকল কর্মীরা তিনটি দাবানল নিয়ন্ত্রণে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়েছেন, তুলনামূলকভাবে বাতাসের তীব্রতা কমলেও আবার তীব্রতর হবে, যার গতিবেগ ৬০ মাইল (৯৬ কিমি/ঘন্টা) পর্যন্ত পৌঁছাবে। স্থানীয় অগ্নিনির্বাপকদের আটটি রাজ্যের পাশাপাশি কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে আসা কর্মীরা সহায়তা করছেন।
বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির আশপাশে চারটি স্থানে দাবানল জ্বলছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড়টি হলো প্যালিসেডস ফায়ার। গত মঙ্গলবার এখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত। ২৩ হাজার ৬৫৪ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত দাবানল নিয়ন্ত্রণের মাত্রা ছিল মাত্র ১১ শতাংশ। দ্বিতীয় বৃহত্তম দাবানল হলো ইটন ফায়ার।
লস অ্যাঞ্জেলেসের উত্তরে ১৪ হাজার ১১৭ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই দাবানল নিয়ন্ত্রণের মাত্রা ছিল ১৫ শতাংশ।
গত বৃহস্পতিবার লস অ্যাঞ্জেলেস ও ভেনচুরা কাউন্টির সীমান্তে ছড়িয়ে পড়ে দাবানল কেনেথ ফায়ার। এক হাজার ৫২ একর জমিতে বিস্তৃত দাবানল নিয়ন্ত্রণের মাত্রা ছিল ৯০ শতাংশ। সবচেয়ে ছোট দাবানল হার্স্ট ফায়ার স্যান ফারনান্ডোর উত্তরে ৭৯৯ একরজুড়ে বিস্তৃত ছিল। এটি নিয়ন্ত্রণের মাত্রা ছিল ৭৬ শতাংশ।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস জানিয়েছে, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল আরো তীব্র হতে পারে, যা আগামী সপ্তাহের শুরু নাগাদ অব্যাহত থাকতে পারে। এতে চলমান দাবানল ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং নতুন দাবানল সৃষ্টি হতে পারে। দাবানলে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়া লাখ লাখ মানুষ বিভিন্ন হোটেল ও বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে।
তবে সেখানকার মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া চাইছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আবাসন এজেন্ট জ্যাসন ওপেনহেইম বলেন, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। হোটেলে জায়গা নেই। বাড়ির মালিকরা পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন। দাবানলের আগে যে ভাড়া ছিল, তার চেয়ে ১০ শতাংশের বেশি ভাড়া চাইছেন তাঁরা।
এদিকে লস অ্যাঞ্জেলেসে খালি পড়ে থাকা বাড়িঘরে লুটপাটের অভিযোগে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী বেশে লুটপাট করছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ডাকাতি ও অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যালিফোর্নিয়ার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আগুন নিয়ন্ত্রণে অক্ষমতার অভিযোগ তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সূত্র : এএফপি, বিবিসি