প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ধারা সমুন্নত রাখতে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে এ আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিশ্বাস করি দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ধারা সমুন্নত রাখবেন। বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও অশিক্ষামুক্ত একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবেন এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করবেন।
মানবতা ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে ৩ নভেম্বর একটি কলঙ্কিত দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কারাগারে নিরাপদ আশ্রয়ে এ ধরনের বর্বর হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন।
তিনি জাতীয় চার নেতার আ�ার মাগফেরাত কামনা করে বলেন, কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ড ছিল জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতা। এর মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলার মাটি থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস এবং বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল।
পঁচাত্তরের সেই ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকরীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদদাতারা পরবর্তী ২১ বছর দেশের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শাসকগোষ্ঠী কখনও সামরিক লেবাসে, কখনও গণতন্ত্রের মুখোশ পরে, অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরেছিল। আ�স্বীকৃত খুনীদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল। হত্যাকারীদের বিচারের বদলে পুরস্কৃত করেছিল। খুনীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করেছিল।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচার কাজ শুরু করে। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর করা হয়েছে। জেল হত্যা মামলা সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি দেশবাসীকে সতর্ক করে দিতে চাই যে, চক্রান্তকারী এবং গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি হাত পা গুটিয়ে বসে নেই। তারা এ দেশে গণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে বারবার হামলা চালিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে, উন্নয়ন বিঘি�ত করতে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।