বিশ্ববাজারে বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম

বিশ্ববাজারে বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম

বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। শীত বাড়ায় জ্বালানির চাহিদা বৃদ্ধি এবং চীনের প্রণোদনা প্যাকেজের কারণে বিনিয়োগকারীদর মাঝে আস্থা ফিরেছে। দেশটির প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগবে, এই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার (৬ জানুয়ারি) তেলের দাম বেড়েছে।

রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, আজ সোমবার সকালে বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৫ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ৭৬ দশমিক ৬৬ ব্যারেল উঠেছে।
এ ছাড়া ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টরমিডিয়েট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ২২ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭৪ দশমিক ১৮ ডলারে উঠেছে। ফলে গত ১১ অক্টোবরের পর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম এখন সর্বোচ্চ।

এদিকে অর্থনীতি চাঙা করতে বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়েই যাচ্ছে চীন। গত শুক্রবার দেশটির সরকার ২০২৫ সালে দীর্ঘমেয়াদি বন্ডের মাধ্যমে বাজারে আরো অর্থ সরবরাহের পরিকল্পনা ঘোষণা করে।
ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনতেই তাদের এই উদ্যোগ। এ ছাড়া চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষণা দিয়েছে, প্রয়োজন হলে ব্যাংকের নগদ জমা সংরক্ষণের হার ও সুদহার কমানো হবে। অর্থাৎ ব্যাংকের হাতে যথেষ্ট পরিমাণে তারল্য ধরে রাখার লক্ষ্যেই এ কথা বলেছে তারা।

চীনের অর্থনীতি গতি হারিয়ে কয়েক বছর ধরেই ধুঁকছে।
সেই সঙ্গে দূষণ কমাতে পরিবহন খাতে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করেছে চীন। এতে দেশটির অপরিশোধিত জ্বালানির আমদানি কমেছে। ফলে বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ ও দ্বিতীয় বৃহত্তম ভোক্তা হিসেবে দেশটির যে অবস্থান ছিল, তা অনেকাংশে ক্ষুণ্ন হয়েছে।

গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইরানের তেল উৎপাদন ও রপ্তানি উভয়ই কমবে। দেশটির নীতিগত কিছু পরিবর্তন নতুন মার্কিন প্রশাসনের আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

গোল্ডম্যান স্যাকসের হিসাব, ইরানের দৈনিক তেল উৎপাদন ৩ লাখ ব্যারেল কমতে পারে। ফলে দেশটির দৈনিক তেল উৎপাদন কমে দাঁড়াতে পারে ৩২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিয়াশীল তেলের খনির সংখ্যাও গত সপ্তাহে একটি কমেছে।

দীর্ঘদিন দাম কম থাকার পর ২০২১ সাল থেকে তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম সর্বোচ্চ ১৩৯ মার্কিন ডলারে ওঠে। সে বছর গড়ে তেলের দাম ১০০ ডলারের ওপরে উঠেছিল। এর পর থেকে দাম অবশ্য কমতে শুরু করে। ২০২৩ সালে ব্যারেলপ্রতি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম সর্বোচ্চ ৯৮ মার্কিন ডলারে উঠেছিল। গড় দাম ছিল ৮৩ ডলার।

তেলের দাম বাড়ানোর জন্য জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর প্রভাবশালী সংগঠন ওপেকের পক্ষ নানান সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরও দাম তেমন একটা বাড়েনি। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরও তেলের দামে অতটা প্রভাব পড়েনি।

২০২৪ সালে তেলের দাম আরো কমে ৭০ ডলারের মধ্যে ছিল। ২০২৫ সালে তেলের দাম ৬০ ডলারে নামতে পারে বলেও জেপি মরগ্যানের পূর্বাভাস।

Agriculture Beauty Fashion Feature political sports Technology আন্তর্জাতিক শীর্ষ খবর