জানুয়ারিতে উন্মুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার

জানুয়ারিতে উন্মুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার

অবশেষে আগামী বছর জানুয়ারিতেই বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে বন্ধ থাকা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। জনশক্তি আমদানি শুরু করতে দুই দেশের মধ্যে গঠিত যৌথ কমিটির মধ্যে দুদফা বৈঠক শেষে এ বিষয়ে চুক্তির খসড়া চূড়ান্তকরণও সম্পন্ন প্রায়। এখন শুধু বাকি সমঝোতা স্মারকে দেশ দুটির মন্ত্রীদের চূড়ান্ত স্বাক্ষর। সেটিও নভেম্বরে সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর আহমদ খান বলেন, ‘মালয়েশিয়াতে জনশক্তি রফতানি বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা প্রায় সম্পন্ন। সবকিছু ঠিক থাকলে নভেম্বরেই চুক্তি স্বাক্ষর এবং জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই শ্রমিক পাঠানো সম্ভব হবে।”

তিনি আরো বলেন, “গত মাসে বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক শামসুন নাহারের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মালয়েশিয়ায় যান। সেখানে চুক্তির খসড়া বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের চূড়ান্ত খসড়াটি সে দেশের মন্ত্রিসভা অনুমোদন করলে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে মালয়েশিয়া যাবেন। দুই দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন।’

জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রফতানি বিষয়ে এদেশের মতো মালয়েশিয়ার সংবাদ মাধ্যমগুলোও রীতিমত সরগরম। কোনো ধরনের মাধ্যম ছাড়াই দুদেশের সরকার সরাসরি বিষয়টি তদারকি করছে বলে এবারের জনশক্তি রফতানির বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। দুদেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়া সফর সফল বলে এ দুদেশের মন্ত্রীরাও বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমকে বলে আসছেন।

তবে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এবার কর্মী নেওয়ার আগে তাদের মালয়েশিয়ার ভাষা, সংস্কৃতি ও আচার-আচরণের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে দেশটির সরকার। স্বল্প অভিবাসন ব্যয়, শ্রমিক স্বার্থরক্ষা, জনশক্তি রফতানিতে স্বচ্ছতা নিরূপণসহ পাঁচটি বিষয় নিশ্চিত করারও পরামর্শ দিয়েছে তারা। বিএমইটি সূত্র জানায়, এবার মালয়েশিয়াতে লোক পাঠানোর ক্ষেত্রে কোটা অনুসরণ করা হবে। এদের মধ্যে নারী কোটা, জেলা কোটাসহ বেশ কয়েক ধরনের কোটা আছে।

সূত্র আরো জানায়, বাংলাদেশকে মালয়েশিয়ার জনশক্তি আমদানির ‘তালিকাভুক্ত উত্স দেশ’ হিসেবে দেখতে তাদের সরকারের পরামর্শকে প্রাধান্য দিয়ে শ্রমিকবান্ধব পাঁচটি বিষয়ই বাস্তবায়ন করতে চায় বাংলাদেশ সরকার। ইতোমধ্যে উৎস দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম অন্তর্ভুক্ত করারও জোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ মুহূর্তে ১৩টি উত্স দেশ থেকে শ্রমিক নেয় মালয়েশিয়া।

জানা যায়, মালয়েশিয়াতে পাঁচ বছরের চুক্তিতে শ্রমিক পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। কর্মীর চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে আরও পাঁচ বছরের জন্য নবায়নের সুযোগ দাবি করা হয়েছে। এটি কার্যকর হলে মূল চুক্তি ও নবায়ন মিলিয়ে ১০ বছরের জন্য মালয়েশিয়ায় কাজের সুযোগ পাবেন কর্মীরা।

এছাড়া কর্মীদের যাওয়ার উড়োজাহাজ ভাড়া নিয়োগকারী কোম্পানিকে সহজ শর্তে বহন করার  প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি কর্মীর থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যয়ভার নিয়োগকারী কোম্পানিকে বহন করারও প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রস্তাবও গ্রহণ করেছে মালয়েশিয়ার সরকার।

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, সরকারিভাবে মালয়েশিয়ায় যেতে ১৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা খরচ হবে।

অর্থ বাণিজ্য