গোপনে পাকিস্তানকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিসিবি!

গোপনে পাকিস্তানকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিসিবি!

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর নিয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিসিবি। পরিচালকদের অন্ধকারে রেখে বিসিবি থেকে কে এই লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা বলেননি বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তবে প্রতিশ্রুতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণের ঠিক আগে বিসিবি থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি গেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)’র কাছে। তাতে উল্লেখ ছিলো ডিসেম্বরের শেষদিকে পাকিস্তান যাবে বাংলাদেশ। যদিও জালাল ভাই বলেছিলেন পাকিস্তানের সঙ্গে সফরের ব্যাপারে কোন যোগাযোগ হয়নি। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনের পরপরই আমরা জানতে পারি ইতোমধ্যেই তাদের সঙ্গে পাকিস্তানে গিয়ে খেলার ব্যাপারে আমাদের লিখিত যোগাযোগ হয়েছে। টিভি চ্যানেল গুলোতে দেখানো হচ্ছিল যে আমরা ওখানে যাচ্ছি, এধরনের যোগাযোগ আসলে হয়েছে। যেহেতু যোগাযোগ হয়েছে, এটা নিয়ে আমরা আজ বিশদ আলোচনা করেছি। আলোচনা করার পর কিছু বিষয় উঠে এসেছে। এটা কী বাধ্যতামূলক, ওখানে কী আমাদের যেতেই হবে নাকি অন্য কোন অপশন আছে। এটা আমরা ঠিক জানি না। কারণ চিঠিটার মধ্যে অনেক ফাঁক আছে। দ্বিতীয়ত যদি যেতেই হয়, নিরাপত্তার বিষয়ে চিঠিতে আমি কিছু লেখা দেখলাম না। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা আছে কিনা, এটা আগে নিশ্চিত হতে হবে। যাতে আমাদের দল যেতে পারে। এসব বিবেচনা করেই আমরা ঠিক করব, আদৌ আমরা যাব কি যাব না। গেলে কখন যাব।’

নাজমুল হাসান বিসিবি সভাপতি হিসেবে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন গত ১৯ অক্টোবরের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায়। তার আগে লিখিত প্রতিশ্রুতি গেলেও বোর্ড সভায় তা তোলা হয়নি। ২৪ অক্টোবরের মুলতবি সভাতেও সভাপতিকে জানায়নি। এমন কি ডিসেম্বরে পাকিস্তানে যাওয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পরও বিষয়টি চেপে রাখা হয়েছিলো। কিন্তু এ ধরনের চিঠি বিসিবি সিইও’র মাধ্যমে যাওয়ার কথা। তিনি না পাঠালে কে এই চিঠি দিয়েছেন? বিষয়টি গোপন রাখাও রহস্যজনক! সব কিছু অবগত হওয়ার পর বিসিবির বর্তমান সভাপতি জানালেন, ‘আমি এটাকে প্রতিশ্রুতি বলব। যে চিঠি গেছে তা খুবই সংক্ষিপ্ত। কিন্তু বোঝা যায় যে আমরা যাব।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে পাকিস্তান সফর করতে হলে সরকারের অনুমোদন লাগবে। অনেকবার এই কথা বলা হয়েছে বিসিবি থেকে। পাকিস্তানের কাছে লিখিত প্রতিশ্রুতির আগে তা সরকারকে অবহিত করা হয়েছে কি না তা পরিষ্কার নয়। তবে পাকিস্তানে যাওয়ার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান পাপন, ‘সব দিকই বিবেচনা করা হবে। বোর্ড থেকে যেহেতু একটা চিঠি গেছে, সেটাকে তো আমরা অস্বীকার করতে পারছি না। ‘কস্ট বেনিফিট অ্যানালাইসিস’ও করতে হবে আমাদের। সুযোগ-সুবিধা, গেলে কী সুবিধা, গেলে আমাদের জন্য ভালো হয় বা না খারাপ বেশি হয়। যদি ভালো মনে করি তাহলে যাব। আর যদি মনে করি না যাওয়াটাই ভালো হবে, তাহলে যাব না। কিন্তু বিষয়টা এখনও আমরা জানি না। এটার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’

এদিকে বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফর নিয়ে হাইকোর্ট চার সপ্তাহের যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো তা এখন আর নেই। বিসিবি যদি পাকিস্তান সফর নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং সরকারের অনুমোদন পায় তাহলে হয়তো পাকিস্তান সফরে যেতে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

খেলাধূলা