ঢাকা, ২২ আগস্ট,২০২৪ (বাসস): সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অর্থনীতিতে ব্যবসায়িক সমাজের গুরুত্ব ও অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা বিধানে সেনাবাহিনীর ভূমিকা রাখছে। শিল্প-কারখানা চালু রাখার ব্যাপারে সেনাবাহিনী কর্তৃক নিরাপত্তা সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে।
আজ ঢাকা সেনানিবাসে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স হলে সেনাবাহিনী প্রধান এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মধ্যে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
সভায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, সেনা সদর ও গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মধ্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মীর নাসির হোসেন, এ কে আজাদ, মোঃ জসিম উদ্দিন, তপন চৌধুরী, আশরাফ আহমেদ, খন্দকার রফিকুল ইসলাম এবং নাসের এজাজ বিজয় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতেই সেনাবাহিনী প্রধান তাঁর বক্তব্যে দেশের অর্থনীতিতে ব্যবসায়িক সমাজের গুরুত্ব ও অবদানের কথা উল্লেখ করেন । তিনি দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা বিধানে সেনাবাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরেন। এছাড়াও, সেনাবাহিনী প্রধান শিল্প-কারখানা চালু রাখার ব্যাপারে সেনাবাহিনী কর্তৃক নিরাপত্তা সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সকলকে আশ্বস্ত করেন।
ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দের পক্ষে এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম তার বক্তব্যে সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে সেনাবাহিনীর সময়োচিত ভূমিকা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্প-কারখানায় উৎপাদন অক্ষুন্ন রাখাসহ আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করায় সেনাবাহিনীর ভূঁয়সী প্রসংশা করেন। তিনি ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, শিল্প-কারখানার নিরাপত্তা প্রদান, বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন, অর্থনৈতিক গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ককে আরো ঘনিষ্টতর করা, আমদানি-রপ্তানিসহ নিরবিচ্ছিন্ন পণ্য সরবরাহ ও সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিতকরণ, সকল বন্দর ও ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সকল মহাসড়কের নিরাপত্তা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করেন। সেই সাথে তিনি শিল্প-কারখানা ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি রোধ, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ইন্ডাস্ট্র্রিয়াল পুলিশ ও ব্যবসায়িক সংগঠনসমূহের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকিসমূহ নিরসনের ব্যবস্থা, অগ্নি-সংযোগের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া কল-কারখানাসমূহ পুনরায় চালুকরণ এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এ সময় সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ একটি উন্মুক্ত পরিবেশে তাদের মতামত ও পরামর্শ উপস্থাপন করেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী প্রধান ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে শিল্প-কলকারখানা ও শিল্পাঞ্চলসমূহে নিরাপত্তা প্রদান, চাঁদাবাজি বন্ধ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনসহ বিবিধ কর্মকান্ডে সেনাবাহিনী পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন।
উল্লেখ্য, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে শিল্পাঞ্চলসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে গত ৯ আগস্ট সেনাবাহিনীর শিল্পাঞ্চল নিরাপত্তা সেল গঠন করা হয়। শিল্পাঞ্চল নিরাপত্তা সেলের তত্ত্বাবধানে শিল্প পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সহায়তায় অতি দ্রুত সাময়িক বন্ধ থাকা কারখানাসমূহ পুনরায় চালু হয় এবং আস্থার ও নিরাপদ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শিল্পাঞ্চলসমূহের নিরাপত্তাকল্পে এবং দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।