ডেট সিকিউরিটিজের প্রাইভেট প্লেসমেন্ট সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)।
গত সোমবার এসইসির ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়।
জানা গেছে, ডেট সিকিউরিটিজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বন্ড। আর এ মার্কেটকে সচল করতেই ডেট সিকিউরিটিজের প্রাইভেট প্লেসমেন্ট সংক্রান্ত বিধিতে সংশোধনী আনা হয়েছে বলে এসইসি সূত্রে জানা গেছে।
প্রকাশিত আইন অনুসারে, কোনো প্রতিষ্ঠান ডেট সিকিউরিটিজের প্রাইভেট প্লেসমেন্ট ছাড়তে চাইলে উক্ত কোম্পানিকে ১০ হাজার টাকা আবেদন ফি হিসেবে জমা দিয়ে প্লেসমেন্ট শেয়ার ছাড়ার জন্য এসইসির চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে ২১ ধরনের তথ্য ও কাগজপত্র সরবরাহ করতে হবে। আর আবেদনপত্রের সঙ্গে আর্থিক প্রতিবেদন সংযুক্ত করতে হবে। যে মেয়াদের আর্থিক প্রতিবেদন দাখিল করা হবে তা ১২০ দিনের মধ্যে এসইসিতে জমা দিতে হবে।
প্রকাশিত আইনে আরো বলা হয়েছে, রুলস-৪ অনুসারে ডেট সিকিউরিটিজ ছাড়ার আবেদন এসইসিতে জমা দেওয়ার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে অনুমোদন দেওয়া হবে, যদি ইস্যুয়ার বা আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান এ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র যথাযথভাবে প্রদান করতে সক্ষম হয়।
যদি কোনো প্রতিষ্ঠান এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে একটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা পূরণ করতে নির্দেশ দেওয়া হবে। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান তা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে কমিশন আবেদন বাতিল হওয়ার কারণ উল্লেখপূর্বক তা বাতিল করতে পারবে।
তবে যদি প্রতিষ্ঠানটি পুর্নবিবেচনার আবেদন জানায় সেক্ষেত্রে আবেদন বাতিল হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তা করতে হবে। আর পুর্নবিবেচনায় গৃহীত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে ধার্য করা হবে।
যদি কমিশন অনুমোদ প্রদান করে সেক্ষেত্রে এসইসি বরাবর অভিহিত মূল্যের ০.১০ শতাংশ হারে অর্থ ব্যাংক ড্রাফট অথবা পে-অর্ডার অনুমোদন ফি ১৫ দিনের মধ্যে প্রদান করতে হবে। যদি ইস্যুয়ার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমিশন বরাবর অনুমোদন ফি প্রদানে ব্যর্থ হয় তাহলে অনুমোদন কার্যকর হবে না।
আইনে উল্লেখিত শর্ত অনুসারে অনুমোদন পাওয়ার পরেও ইস্যুয়ার অর্থাৎ যে প্রতিষ্ঠান ডেট সিকিউরিটিজ ছাড়বে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে ৯টি শর্ত পালন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে- কমিশনের অনুমোদন পরবর্তী এক বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে, ডেট সিকিউরিটিজ ইস্যু করার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে স্ট্যাটাস রিপোর্ট কমিশনে জমা দিতে হবে, সাবসক্রিপশন সমাপ্ত হওয়ার ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে।
এভাবে ট্রাস্টি, সাবস্টিটিউট ট্রাস্টি, ট্রাস্টির কাজ, ট্রাস্টির ফি সম্পর্কে বণর্না করা হয়েছে।
এছাড়া ট্রাস্টি, সিকিউরিটিজ হোল্ডার ও ইস্যুয়ার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনো ধরনের বিরোধ সৃষ্টি হলে তা বিরোধ মীমাংসা আইন ২০০১-এর মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে বলেও আইনে উল্লেখ করা হয়।
‘প্রাইভেট প্লেসমেন্ট অব ডেট সিকিউরিটিজ রুলস, ২০১২’ পালনে ব্যর্থ হলে এর শাস্তি সম্পর্কেও আইনে বলা হয়েছে।
সর্বশেষ ডেট সিকিউরটিজ ছাড়ার সঙ্গে কোম্পানিগুলোকে যা পূরণ করতে হবে তা-ও চূড়ান্ত আইনে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- আবেদনপত্র, ইনফরমেসন মেমোরান্ডাম, ডিড অব ট্রাস্টি এবং সর্বশেষ ডিউ ডিলিজিয়েন্স সার্টিফিকেট অব ট্রাস্টি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর এসইসির নিয়মিত ৪৪৫তম কমিশন সভায় সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) কিছু পরিবর্তন সাপেক্ষে খসড়া এই নীতিমালার অনুমোদন দেয়। পরবর্তীতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর খসড়া নীতিমালাটি জনমত যাচাইয়ের জন্য এসইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। গত ১ অক্টোবর খসড়া প্রাইভেট প্লেসমেন্ট নীতিমালা বা প্রাইভেট প্লেসমেন্ট অব ডেট সিকিউরিটিজ রুলস, ২০১২ এর ওপর জনমত জরিপের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ওই জনমত জরিপ যাচাই বাছাই শেষে কিছু পরিবর্তন সাপেক্ষে এসইসির ৪৪৮তম নিয়মিত কমিশন সভায় প্রাইভেট প্লেসমেন্ট নীতিমালার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।