জিকিউ বলপেনের এনএভি প্রকাশে কারসাজি

জিকিউ বলপেনের এনএভি প্রকাশে কারসাজি

গত ২০ জুন তারিখে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ জিকিউ বলপেনের ফিক্সড অ্যাসেট রিভ্যালুয়েশন সর্ম্পকিত একটি তথ্য প্রকাশ করে। এতে কোম্পানির সম্পদমূল্য ১৩ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ১৩৭ দশমিক ৩৬ কোটি টাকা দেখানো হয়। সুতরাং যৌক্তিক কারণেই কোম্পানি তার অ্যাসেট রিভ্যালুয়েশনের ভিত্তিতে রিভাইজড এনএভি (নিট অ্যাসেট ভ্যালু) শেয়ার হোল্ডারদের জানাতে বাধ্য। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, ডিএসই কর্তৃপক্ষ গত ১ আগস্ট তারিখে জিকিউ বলপেনের অর্ধবার্ষিক রিপোর্টে কোম্পানিটির ইপিএস (শেয়ারপ্রতি আয়) প্রকাশ করলেও এতে কোনো এনএভি উল্লেখ করেনি।

উল্লেখ্য, কোম্পানির রির্পোট অনুযায়ী রিভাইজড এনএভি ৩০২, যা কোম্পানির নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। আমরা জানি, একটি কোম্পানির এনএভির চাইতে তার শেয়ারের বাজারমূল্য থাকে বেশি। সেই বিচারে এই শেয়ারের মূল্য এখন কোথায়? এখন প্রশ্ন, ডিএসইর ওয়েবসাইটে এনএভি প্রকাশ না করে কোন স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থ রক্ষা করছে। মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করে শেয়ারমূল্য বাড়ানো যেমন অন্যায়, ঠিক তেমনি সত্য তথ্যকে যথাসময়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে তুলে না ধরাও সমান অপরাধ।

জিকিউ বলপেন কোম্পানির পেইড আপ (পরিশোধিত) পুঁজি ৬ দশমিক ৫ কোটি টাকা, রির্জাভ ও সারপ্লাস ৪৬ দশমিক ৯ কোটি টাকা, অর্ধবার্ষিকী ইপিএস ৯ দশমিক ৭৫ টাকা, ৯ মাসের ইপিএস ১১ দশমিক ৮৫ টাকা, এনএভি ৩০২ টাকা। এরূপ মানের একটি কোম্পানির বাজারমূল্য কোন স্তরে থাকা উচিত?

দুই-তিন মাসের বাজার গতিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে ইচ্ছাকৃতভাবেই ফান্ডামেন্টালি শক্তিশালী একটি কোম্পানিকে অশুভ চক্রের ইঙ্গিতে মূল্যস্তর নামিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে গচ্ছিত শেয়ারগুলোকে কায়দায় হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাজার নিয়ে যেমন চলছে গ্যাম্বরিং ঠিক তেমনি চলছে রিভার্স গ্যাম্বলিং অর্থাৎ অন্য শেয়ারে লাভের টাকা দাবিয়ে সময়মত বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করা। এ ধরনের ঘটনায় সাধারণ বিনিয়োগকারী ফান্ডামেন্টালি শক্তিশালী কোম্পানির প্রতি আস্থা হারাবে এবং তথাকথিত ব্লু চিপ শেয়ারের দিকে ঝুঁকে নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চিন্তায় বাজারকে করে তুলবে আরো অস্থির, আরো অস্বাভাবিক। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ যথাসময়ে না পড়লে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার হয়তো আর কখনো স্বাভাবিক আর স্থিতিশীল হতে পারবে না।

অর্থ বাণিজ্য