জওহরলাল নেহরুর পরে প্রথমবার ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রী তিনবার শপথ নিয়েছেন। তৃতীয়বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রবিবার শপথগ্রহণ করেন নরেন্দ্র মোদি। শপথগ্রহণের আগেই বহু রাষ্ট্রনেতা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পড়শি দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানেরা রবিবার মোদির শপথে আমন্ত্রিত ছিলেন। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান থেকে কোনো শুভেচ্ছাবার্তা ভারতে আসেনি। শপথ গ্রহণে আমন্ত্রিতদের তালিকাতেও ছিল না পাকিস্তান। অবশেষে অনেকটা সময় কেটে যাবার পর, নিজের এক্স হ্যান্ডলে একটি টুইট করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ লেখেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেয়ার জন্য নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানাই।”
শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রীর বড় ভাই এবং ক্ষমতাসীন দলের সুপ্রিমো নওয়াজ শরিফও। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) প্রধান নওয়াজ বলেছেন যে, সাম্প্রতিক নির্বাচনে মোদির সাফল্য তার নেতৃত্বের প্রতি জনগণের আস্থা প্রতিফলিত করে এবং তাকে দুই বিলিয়ন মানুষের ভাগ্য গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে। আপাতভাবে শেহবাজের এই বার্তাকে নিয়মরক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু কিছুদিন আগে, লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরে পাকিস্তানের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শুভেচ্ছা জানানো হলে, সেটা ‘তাড়াহুড়ো’ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন , ‘আমরা ওদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না’।
বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও এনডিএ-তে থাকা দলগুলোর সম্মলিত আসনসংখ্যা যে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা পেরিয়ে গেছে, ফলাফলে তার স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল। তার পরেও পাকিস্তানের বিদেশ দফতরের ওই বিবৃতি কেন, বোধগম্য হয়নি অনেকেরই। চলতি বছরের মার্চ মাসেই প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন শেহবাজ নিজেও। তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মোদি। এক্স হ্যান্ডেলে তার বার্তা ছিল, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য শেহবাজ শরিফকে অনেক অভিনন্দন। দুদিন কেটে যাওয়ার পর সেই বার্তার জবাব দিয়েছিলেন শেহবাজ।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণের আগে শুক্রবার পাকিস্তান জানিয়েছিল, তারা ভারতসহ সব প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক চায়। কিন্তু নির্বাচনে জয়ের পর কেন মোদিকে অভিনন্দন জানানো হল না, সেই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। ২০১৯ সালে পাকিস্তানের সাথে ভারতের সম্পর্ক ধাক্কা খায়। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতীয় সংসদ ৩৭০ ধারা স্থগিত করার পরে ইসলামাবাদ নয়াদিল্লির সম্পর্কে চিড় ধরে।