ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ ইব্রাহিম রাইসির লাশ মাশহাদে ইমাম রেজার (আ.) মাজার কমপ্লেক্সে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টকে শেষবিদায় জানাতে মাশহাদ পরিণত হয়েছিল জনসমুদ্রে।
প্রেসিডেন্ট রাইসির জন্ম ও বেড়ে ওঠা ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদ শহরে। মৃত্যুর ৪ দিন পর বৃহস্পতিবার মাশহাদেই জানাজা শেষে শিয়াদের অষ্টম ইমাম রেজার মাজারে তাকে লাশ দাফন করা হয়। রাইসি হলেন ইরানের প্রথম রাজনীতিবিদ যাকে এ মাজারে দাফন করা হলো। এর মধ্য দিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্টকে অভূতপূর্ব শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাইসির জানাজায় বিভিন্ন দেশের নেতা, রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বও অংশ নেন। রাইসিকে শেষ বিদায় জানাতে সকাল থেকেই রাজধানী তেহরান থেকে ৭৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত মাশহাদে জড়ো হতে থাকেন লাখো মানুষ। শহরের রাস্তায় রাইসির বড় বড় ছবি, কালো পতাকা এবং শিয়াদের নানা প্রতীক টানানো হয়।
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত প্রেসিডেন্ট রাইসির মরদেহ ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে পৌঁছানোর পর শেষ বিদায় জানাতে জনসমুদ্র কান্নায় ভেঙে পড়ে। এ সময় লাখ লাখ জনতার সবার হাতে হাতে ছিল প্রেসিডেন্ট রাইসির ছবি এবং বিভিন্ন বক্তব্য লেখা প্ল্যাকার্ড। শোকার্ত ইরানিরা সবাই বুক এবং মাথা চাপড়ে (আনুষ্ঠানিকভাবে শিয়াদের শোক প্রকাশ) প্রিয় নেতার জন্য শোক প্রকাশ করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশের বিরজান্দে নেওয়া হয় রাইসির মরদেহ। সেখানেও তাকে শ্রদ্ধা জানান সাধারণ মানুষ।
এ ছাড়া ইরানের পররাষ্ট্রন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের লাশ বৃহস্পতিবার তেহরানের অদূরে রেই শহরের ইমামজাদা আব্দুল আজিমের (আ.) মাজার এলাকায় দাফন করা হয়েছে। রেই শহরেও তার শেষবিদায় অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।
সোমবার সকালে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকায় ইরানি প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় অনুসন্ধানী দল। দুর্ঘটনায় নিহত হন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি, পূর্ব আজারবাইজানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম, প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান মেহেদি মুসাভি। প্রাণ হারিয়েছেন হেলিকপ্টারের পাইলট, কো-পাইলটও।