ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টসহ বেশ কয়েকজন ইসরাইলি নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি বিবেচনা করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
জার্মানি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে তা মেনে চলবে দেশটি। এমনকি আইসিসির নির্দেশ বাস্তবায়নে নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করবে তারা।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই বিষয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে জার্মান সফরে গেলে নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করবে তারা।
জার্মানি আইসিসির পরোয়ানা কার্যকর করবে কি না- সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে জার্মান চ্যান্সেলর মুখপাত্র স্টিফেন হেবেস্ট্রেইট বলেন, অবশ্যই, আমরা আইন মেনে চলি। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে জার্মানি নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করবে।
জার্মানির এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে ইসরাইল। দেশটির সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনার চেষ্টাও চালাচ্ছে ইসরাইলি দূতাবাস। আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঠেকাতে মিত্র দেশগুলোকে অনুরোধ করেছে নেতানিয়াহু সরকার।
শুধু জার্মানিই নয়, ফ্রান্স ও নরওয়েও আইসিসির নির্দেশনা মেনে চলবে বলে জানিয়েছে। নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নরওয়ে গেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।
এর আগে ইসরাইলের ১২ টিভি চ্যানেল এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদনে জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তিন বিচারক যদি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং দেশটির যুদ্ধমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার বিষয়ে একমত হন তাহলে এখন থেকে এই দুজন রোম চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী কোনো দেশে ভ্রমণে যেতে পারবেন না।
হিব্রু ভাষার এই সংবাদমাধ্যমের মতে, এই রুল জারি হলে নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টকে আর জার্মানি, হল্যান্ড, গ্রিস, ফ্রান্স, জাপান ও স্পেনের মতো দেশে ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হবে না।
গত সোমবার (২০ মে) আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান জানান, গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং হামাসের তিন নেতা হানিয়া, সিনওয়ার ও দেইফের বিরুদ্ধে আইসিসির কাছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন তিনি।
তবে এতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসরাইল ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র নয়। তবে ফিলিস্তিন সদস্য হওয়ায় আইসিসি জানিয়েছে, গাজা, পূর্ব জেরুজালেম ও অধিকৃত পশ্চিম তীর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সম্পৃক্ত যেকোনো দেশের বিরুদ্ধে আদালতের বিচারিক এখতিয়ার আছে।