সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা উঠল ৪৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আবহাওয়া অফিস প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮৫ সাল থেকে এটাই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দেশের চলতি মৌসুমের এবং চুয়াডাঙ্গায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জেলায় টানা ২০ দিন ধরে তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। চলতি মৌসুমের বেশির ভাগসময়ই এই জেলায় দেশের এবং মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার প্রতিষ্ঠার পর ২০০৫ সালের ২ জুন চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ২০১৪ সালের ২১ মে চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটাই এই জেলার রেকর্ডকৃত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। গত বছর ২০২৩ সালের ১৯ ও ২০ এপ্রিল এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, টানা ২০ দিন ধরে এই জেলায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বেশ কয়েক দিন দেশের এবং এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর ১২টায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরও বেড়ে বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ১২ শতাংশ।
এদিকে প্রচণ্ড রোদে কৃষকের ফল-ফসল ও সবজি বাগান ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এ ছাড়া জেলায় বিভিন্ন সড়কের রাস্তার পিচ গলে যেতে দেখা গেছে। শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালকরা অস্থির হয়ে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষ। জেলার সকল স্কুলকলেজ, কিন্ডারগার্টেনসহ কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গায় বেশ কয়েকজন মুরগি খামারি বলেন, তীব্র গরমে হাজার হাজার মুরগি মারা যাচ্ছে। গ্রাম এলাকার ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে আরও বেশি হুমকির মুখে পড়ছে হচ্ছে। পোল্ট্রি, লেয়ার, কালার বার্ড, সোনালীসহ বিভিন্ন জাতের মুরগি মারা যাচ্ছে গরমে। এতে খামারিদের পথে বসা অবস্থা হয়ে পড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহা. আতাউর রহমান বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।