গাবতলীতে সবচেয়ে বেশি দামি গরু এসেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে। আদর করে মালিক গরুটির নাম রেখেছেন ‘মন্টু’। মন্টু নামের এই গরুটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় দেশি গরু। মন্টুর দাম চাওয়া হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা, কিন্তু ক্রেতাদের কেউ ৭ লাখের বেশি বলছে না।
মন্টুর মালিকের দাবি এই গরুর মাংস পাওয়া হবে ২০ থেকে ২২ মণ।
প্রতিদিন মন্টুর খাবারের মেন্যুতে থাকে খইল, গমের ভূষি, খূদের ভাত, ছোলা ভাঙ্গা, লবন ও সবুজ ঘাস।
মন্টুর বয়স বর্তমানে ৪ বছর দুই মাস চলছে। এ বিষয়ে মন্টুর মালিক এ এস এম হারিস মিয়া বলেন, মন্টুকে আমি ৪ বছর দুই মাস ধরে পালছি। মন্টুর জন্ম তারিখ আমার কাছে লিখা আছে।
তিনি আরো বলেন, মন্টুর মায়ের নাম মুন্নি। মুন্নির সবচেয়ে বড় ছেলে মন্টু। এছাড়া মুন্নির আরো একটি ছোট ছেলে আছে তার নাম ঝন্টু।
তবে হারিস মিয়া কিছুটা আক্ষেপ নিয়ে বলেন, যে আশা নিয়ে মন্টুকে গাবতলীতে নিয়ে এসেছি সেই আশায় গুড়ে বালি।
তিনি আরো বলেন, গাবতলীতে বড় গরুর দাম কেউ বলতে চায় না।
তিনি আরো বলেন, ক্রেতারা কসাইয়ের দামে মন্টুকে কিনতে চায়।
প্রসঙ্গত, পবিত্র ঈদুল আযহার বাকি ২ দিন থাকলেও মূল বেচাকেনা চলবে আর মাত্র ১দিন।
এখন রাজধানীর অধিকাংশ পশুরহাটে ক্রেতার উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা যাচ্ছে।
ক্রেতারা সাধ্যমতো যাচাই-বাছাই করছেন পছন্দের কোরবানির পশুটি কেনার জন্য।
বিক্রেতারা জানান, সীমিত লাভ করে পশু বিক্রি চলছে। তবে বাস্তবতা হলো— অধিকাংশ ক্রেতা ও বিক্রেতা একে অপরকে দুষছে।
ক্রেতা বলছে, ব্যাপারীরা কোরবানির পশু বিক্রি করছে না; দাম বেশি বলছে। অপরদিকে বিক্রেতারা বলছে, ক্রেতা দাম অনেক কম বলছে।
তবে সবদিক বিবেচনা করে বলা যায়, বৃহস্পতিবার সব পশুরহাটে বেচাকেনা জমজমাট।
এ বিষয়ে সাভার থেকে আসা গুলজার ব্যাপারী বলেন, আজকে বেচাকেনা ভালো অন্যান্য দিনের তুলনায়। তিনি আরো বলেন, তবে আমাদের এবার লাভ হচ্ছে সীমিত। কারণ, গরু এবার হাটে অনেক বেশি।
তবে বড় পশু কেনার চেয়ে ক্রেতাদের চাহিদা ছোট পশুর ক্ষেত্রে বেশি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাবতলীর স্থায়ী হাটসহ রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদিত ২০টি পশুরহাটে কেনাবেচা জমে উঠেছে।
ঈদের শেষ মুহুর্তে বিক্রেতা কম লাভে পশু ছাড়ছে আর এর ফলে ক্রেতারাও কম যাচাই বাছাই করে সহজেই পিছন্দ করে ফেলছেন সাধ ও সাধ্যের উৎসর্গের পশুটিকে।
ক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, কোরবানীর আর বাকি নেই। তাই ৫৭ হাজার টাকা দিয়ে কিনে নিলাম একটি।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহ্র রাস্তায় কোরবানী দেওয়া বড়ো কথা দাম দরের থেকে।
তবে বড় পশু বিক্রেতাদের ক্ষোভ পশু অনুযায়ী দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া থেকে আসা বড় পশুর মালিক কামাল বাংলানিউজকে বলেন, আমার গরুর দাম ১২ লাখ টাকা। কিন্তু দাম বলে মাত্র ৪ লাখ টাকা।
তিনি আরো বলেন, সবাই কসাইর দামে দাম বলছে।
রাজধানীর পশুরহাটে উট ও দুম্বার চাহিদা বেশি লক্ষ করা যায়। গাবতলীতে মোট ৫টি দুম্বা এসেছিল। সবগুলো বিক্রি হয়ে গেছে।
১২ মণ মাংস পাওয়া যাবে এমন উট ৬ লাখ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অপরদিকে, ৩৫ কেজি মাংস পাওয়া যাবে এমন দুম্বা ২ লাখ টাকা থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার গাবতলীতে ৮টি উট দেখা গেছে। উটগুলো ভারতে রাজস্থান থেকে এসেছে।