চামড়া নিয়ে বিপাকে কুমিল্লায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

চামড়া নিয়ে বিপাকে কুমিল্লায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

কোরবানির পশুর চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছে কুমিল্লার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

ওই সব ব্যবসায়ীরা সারা বছর চামড়া ব্যবসা না করলেও প্রতি কোরবানির ঈদে গ্রামের প্রতিটি পাড়ায়, মহল্লায় ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করে বিভিন্ন হাট-বাজার ও সড়কের কাছে নির্ধারিত স্থানে জমা করেন।

পরে বড় ব্যবসায়ীদের কাছে তা বিক্রি করেন। তবে বেশি লাভের আশায় উচ্চমূল্যে চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছেন কুমিল্লার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ক্ষুদ্র চামরা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন স্থান থেকে চামড়া সংগ্রহ করে বড় ব্যবসায়ীদের আশায় বসে আছেন। কিন্তু সময় গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এলেও তেমন কোনো বড় ব্যবসায়ী তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছে না। আর যারা আসছেন তারা যে মূল্যে চামড়া কিনতে চাচ্ছেন তাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রতিটি চামড়ায় ৩ থেকে ৪শ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। তাই অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী উচ্চমূল্যের আশায় এখনও চামড়া নিয়ে বসে আছেন এলাকার বিভিন্ন স্থানে।

এ বিষয়ে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কেরনখাল ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আলী আজ্জম জানান, আমরা প্রতি বছর বিভিন্ন গ্রাম থেকে চামড়া কিনি। পরে বড় ব্যবসায়ীরা আসেন এবং আমাদের কাছ থেকে তা কিনেন। এতে প্রতি চামড়ায় ২ থেকে ৩শ টাকা লাভ হয়। কিন্তু এ বছর আমি ২৩টি চামড়া কিনে বড় ব্যবসায়ীদের অপেক্ষায় বসে আছি সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলো এখনো কেউ আসেনি। তাই কি করব ভেবে পাচ্ছি না।

এ বিষয়ে একই জেলার দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের ক্ষুদ্র রহমত আলী জানান, অন্য বছর চামড়া কেনা শেষ হতে না হতেই বড় ব্যবসায়ীরা এসে আমাদের কাছে থেকে কিনে নেয়। কিন্তু এ বছর তেমন কেউ আসছে না। আর যারা আসছে তারাও আমাদের কেনার চেয়ে কমমূল্য বলে। তাই বিক্রি করছি না।

তিনি আরও জানান, আমরা প্রতিটি চামড়া কিনেছি এক হাজার থেকে ১ হাজার ২শ টাকা দরে। আর বড় ব্যবসায়ীরা এসে প্রতিটি চামড়া দাম করছেন ৭ থেকে ৮শ টাকা।

এ বিষয়ে জেলার অন্যতম চামড়া ব্যবসায়ী চান্দিনা উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের ফকন উদ্দিন খন্দকার জানান, ঢাকার ট্যানারি মালিকরা মূল্য নির্ধারণ করে না দেওয়ায় কোরবানির পশুর চামড়া কেনাবেচা নিয়ে বিপাকে আছি।

অপরদিকে, এ জেলায় গত বছরের চেয়ে স্থায়ী ব্যবসায়ী কম থাকায় উচ্চমূল্যে চামড়া কিনতে সাহস পাচ্ছি না।

তিনি আরও জানান, আমি এ পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার চামড়া কিনেছি। প্রতিটি চামড়া কিনেছি ৬ থেকে ৮শ টাকায়। আর এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা উচ্চমূল্যে চামড়া সংগ্রহ করায় এ অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে।

এ বিষয়ে জেলার অপর ব্যবসায়ী কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকার লোকমান হোসেন জানান, ঢাকার ট্যানারি মালিকরা জানিয়েছেন, এবার চামড়ার কোনো মূল্য নির্ধারণ করবেন না তারা। বাজার দরে তারা এবার চামড়া সংগ্রহ করবেন। তবে ওই বাজার দর কত হবে স্পষ্ট না করায় কুমিল্লা ব্যবসায়ীরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন। এর ফলে উচ্চমূল্যে বা অন্য সময়ের দরে বড় ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনছেন না।

অর্থ বাণিজ্য