৯ জিলহজকে আরাফার দিবস বলা হয়। জিলহজ মাসের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ দিবস হলো আরাফার দিবস। হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আরাফার দিনে জোহর এবং আসরের মাঝে চার রাকাত নামাজ পড়বে, প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা একবার এবং সূরা ইখলাস পঞ্চাশ বার করে পড়বে, সে ব্যক্তির জন্য হাজার নেকি লিপিবদ্ধ করা হবে। পবিত্র কোরআনের প্রতিটি শব্দের বিনিময়ে জান্নাতে তার মর্যাদা এত বেশি উঁচু করা হবে, যার দূরত্ব পাঁচ বছরের দূরত্বের সমান। কোরআনের প্রতিটি বর্ণের বিনিময়ে ৭০টি হুর বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রত্যেক হুরের সঙ্গে ৭০টি মণিমুক্তাখচিত দস্তরখানা থাকবে। প্রতি দস্তরখানায় হাজার রংয়ের খাবার থাকবে। খাবারগুলো বরফের ন্যায় শীতল, মধুর ন্যায় মিষ্টি এবং মেশক-আম্বরের ন্যায় সুগন্ধযুক্ত হবে। এ খাবারগুলোতে আগুনের ছোঁয়া হবে না এবং শিকের ছেঁকাও থাকবে না। প্রত্যেক গ্রাস আগের গ্রাসের চেয়ে উত্তম হবে। তার কাছে এমন এক পাখি আসবে যার ঠোঁট হবে স্বর্ণের এবং পাখা হবে মর্মর পাথরের। একটি পাখির ৭০টি পালক থাকবে। পাখিগুলো এত সুন্দর গান করবে, যা কখনো শোনা হয়নি। এসব পাখি বলবে, হে আরাফবাসী। স্বাগত! হুজুর (সা.) বলেন, এরপর এই পাখি সে ব্যক্তির বাটিতে পড়ে যাবে। এর প্রত্যেক পালকের নিম্নদেশ থেকে ৭০ রকমের খাবার বের হবে। বেহেশতিরা সে খাবার খাবে। এরপর সে পাখি উড়ে যাবে। এই নামাজ আদায়কারীকে যখন কবরে রাখা হবে, তখন কোরআনের প্রতিটি বর্ণের বিনিময়ে তার কবর আলোকিত হয়ে যাবে। সে আলোতে করবস্থ লোক আল্লাহর ঘর তওয়াফকারীদের অবলোকন করবে। সে লোকের জন্য জান্নাতের একটি দ্বার খুলে দেওয়া হবে। সে দরজা দিয়ে তাকে তার পুণ্য ও মর্যাদা দেখানো হবে। সেগুলো তার জন্যই নির্দিষ্ট থাকবে। তখন সে বলবে, হে আল্লাহ! তুমি কেয়ামত সংঘটিত করে দাও। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আরাফার দিনে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে, প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা তিন বার বিসমিল্লাহ সহকারে, এরপর সূরা কাফিরুন তিন বার, সূরা ইখলাস একবার পড়বে। প্রত্যেক সূরা বিসমিল্লাহ সহকারে পড়বে। আল্লাহতায়ালা ফেরেশতাদের বলবেন যে, তোমরা সাক্ষী থাক আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। আমাদের সবাইকে আরাফার এই বরকতময় দিনে ইবাদত করার তৌফিক দান করুন। আমিন।