পুঁজিবাজারে অপরাধ পাচ্ছে না এসইসি!

পুঁজিবাজারে অপরাধ পাচ্ছে না এসইসি!

চলতি বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০০২ সালের পর এ নিয়ে দুই দফা এমন ঘটনা ঘটল, আরেকবার ঘটে ২০০৪ সালে। ওই বছরের অক্টোবর ও ডিসেম্বর মাসে এসইসির এনফোর্সমেন্ট অ্যাকশন ছিল শূন্য অর্থাৎ ওই দুই মাসে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

এরপর চলতি বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় দফায় কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না।

অপরাধ খুঁজে না পাওয়ার কারণে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া একটি আদর্শ পুঁজিবাজারের লক্ষণ। তবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের প্রেক্ষাপটে এখনও তেমন পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন খোদ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরাই।

এ বিষয়ে মন্তব্য করলে এসইসি ক্ষুব্ধ হতে পারে এমন আশঙ্কা সত্ত্বেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, পুঁজিবাজার পরিস্থিতি ভালো হলে এ ধরনের অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। তবে ডিএসই প্রতি নিয়তই কোম্পানিগুলোর নানা অনিয়ম খুঁজে বেড় করছে। আর এসব অনিয়মের বিষয়ে ডিএসই যা করছে তা এসইসিকে জানাচ্ছে। নতুন তালিকাভুক্ত ও প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন প্রাপ্ত কোম্পানিগুলোরও অনিয়ম রয়েছে। এগুলোর বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া যেত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে এসইসির নির্বাহী পরিচালক ও এনফোর্সমেন্ট বিভাগের প্রধান ফরহাদ আহমেদের সঙ্গে তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, এ বিষয়ে এসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগে ফরহাদ আহমেদের নেতৃত্বে আরো ছয়জন কর্মকর্তা কাজ করছেন। এরা হলেন- পরিচালক মোশাররফ হোসেন, মোহাম্মদ আবুল হাসান, উপ-পরিচালক মুস্তারি জাহান, হোসেইন খান, মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসইসির এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিনই নানা অভিযোগ আসছে। অধিকাংশই আমলে নেওয়ার মত অভিযোগ। আবার এসইসির কর্পোরেট গভারন্যান্স বিভাগ, ডিএসই ও সিএসই থেকেও নানা অনিয়মের তথ্য উপাত্ত পাঠানো হয়। তবে অধিকাংশই পড়ে থাকে।

জানা গেছে, ডিএসই ও সিএসইর পক্ষ থেকে সম্প্রতি বেশ কিছু কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দরের অস্বাভাবিক উত্থান-পতনের বিষয়ে তথ্য উপাত্ত দেওয়া হয় এসইসিকে। কিন্তু এসব বিষয় আমলে নিচ্ছে না এসইসি।

আলমগীর হোসেন নামক এক বিনিয়োগকারী বলেন, গত দেড় দুই মাস ধরে বাজারের মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর দর বাড়া-কমার হার ছিল অস্বাভাবিক। অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে কিছু কোম্পানির শেয়ার দর। আবার কিছু কোম্পানির শেয়ারের ক্ষেত্রে একদিন ক্রেতা থাকে তো আরেকদিন থাকে না। নিয়ন্ত্রক হিসেবে এ বিষয়ে এসইসির কোনো ভূমিকাই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

এদিকে আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, ফেসবুকে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এসইসির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও ফেসবুকে গুজবসৃষ্টিকারীরা সক্রিয় রয়েছে। লেনদেন শুরু হওয়ার আগে থেকেই বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের নির্দেশ দিচ্ছে। অথচ এসইসি নিস্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

অর্থ বাণিজ্য