পথশিশুদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে: দীপু মনি

পথশিশুদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে: দীপু মনি

সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, পথশিশুদের স্বাভাবিক জীবনযাপন নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে। পথশিশুদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে।

সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে চাইল্ড সেনসেটিভ সোশ্যাল প্রোটেকশন ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের অধীনে পথশিশুদের পরিস্থিতি বিষয়ক গবেষণা পত্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি)।

দীপু মনি বলেন, যারা পথেই থাকে তাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। তাদের অসহায়ত্ব অনেক বেশি রকমের, তারা হয়তবা সমস্যার সম্মুখীন হয়, অনেক রকমের নির্যাতনেরও শিকার হয়। রাতের অন্ধকারে খুবই অনিরাপদ একটা অবস্থার মধ্যে থাকে। আর যারা রাতে পরিবারের কাছে ফিরে, এদেরও নানা সমস্যা থাকে। নানা কারণে পথশিশু হয়। পরিবার ভেঙে যাওয়া, অতি দারিদ্র্য ও নানাবিধ সমস্যার কারণে শিশুরা পথে থাকে। তারপরও তারা নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়।

পথশিশুদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব ও সহানুভব হওয়ার বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে তিনি বলেন, পথ চলতি মানুষ কীভাবে তাদের সঙ্গে আচরণ করে তার প্রভাব তাদের ওপর পড়ে। আমাদের প্রত্যেককে তাদের প্রতি সিমপ্যাথি দেখাতে হবে। আমরা কতজন এ শিশুদের একবার ভালো করে দেখি? আমরা হয়ত জীবন বদলে ফেলতে পারব না কিন্তু যে কয়েক সেকেন্ডের জন্য তাদের সঙ্গে আমাদের একটা যোগাযোগ ঘটলে, সেই কয়েকটা সেকেন্ডে তাদের প্রতি যদি আমাদের সহমর্মিতা থাকে, তার প্রতি আচরণে, আমাদের কথায় তার জীবনে একটা পরিবর্তন এনে দিতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা যেভাবে আচরণটা করি সাধারণত তার কারণে তাদের মধ্যে একটা হীন মনোভাব তৈরি হয়। সে মনে করে নিজে কোনো একটা অপরাধ করছে, মনে করে সে ভীষণ রকম খারাপ কিছু বা তুচ্ছ। আমরা যদি এ বাচ্চাগুলোকে স্বপ্ন দেখাতে পারি, তাহলে তারা স্বপ্নের দিকে নিজেদের নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকদূর এগিয়ে যাবে। যদি তাদের প্রতি আচরণটাই সেই রকম ইতিবাচক না হয়, তাহলে কিন্তু তারা স্বপ্ন দেখতে সক্ষম হবে না।

দীপু মনি সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও পথশিশুদের সমাজের মূলধারায় আনতে কাজ করার আহ্বান জানান।

মন্ত্রী পথশিশুদের ওপর উন্মোচিত গবেষণাপত্রটি সম্পর্কে তার মূল্যায়নে বলেন, এ বিষয়টিতে যদিও সরকার অত্যন্ত সজাগ এবং ইতোমধ্যে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পথশিশুদের আশ্রয়, শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনে অনেক কাজ চলমান রয়েছে। তারপরও এ গবেষণায় তাদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে আরও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া গেল, যা ভবিষ্যতে নীতিনির্ধারণী বিষয়ে কাজ করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তিনি গবেষণাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হেসেন (রিমি) বলেন, এ গবেষণা ভবিষ্যতে পথশিশুদের জন্য কাজ করতে সহায়তা করবে। শিশুদের জন্য একটি সহনশীল সমাজ করতে হবে। অনগ্রসর শিশুদের জন্য পুনর্বাসন, শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য তার মন্ত্রণালয় ৬টি কেন্দ্র পরিচালনা করছে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর