ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের একটি ত্রাণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় জাতিসংঘের একটি সংস্থার এক কর্মীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২২ জন।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবিসি বলছে, বুধবার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের পূর্ব দিকে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা করে বলে জানা গেছে, যা রাফাহের পূর্ব অংশে অবস্থিত।
এ ঘটনায় ১৫ বছর বয়সী এক ছেলে ও ২৭ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী চারজন পুরুষ নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ আবু হাসনা নামে পরিচিত।
ইউএনআরডব্লিউএ জানায়, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে তাদের একজন কর্মী নিহত এবং আরও ২২ জন আহত হয়েছেন।
সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নির্লজ্জ অবহেলার কারণে আমাদের স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ এখন সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে।’
ইউএনআরডব্লিউএ’র মুখপাত্র জুলিয়েট তোমা বলেন, হামলার সময় ৬০ জন মানুষ এই স্থাপনাটিতে কাজ করছিলে বলে আমরা মনে করছি। এ ছাড়া এই স্থাপনাটিকে খাদ্য ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামের গুদাম হিসাবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ইসরায়েলি বাহিনী এই হামলার জন্য দায়ী। আমাদের দল ঘটনাস্থলে রয়েছে এবং তারাই হতাহতদের সংখ্যা জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহত পাঁচজনের নামের তালিকায় মোহাম্মদ আবু হাসনা নামের একজন ব্যক্তিও রয়েছেন। যাকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামাস কমান্ডার হিসেবে ধারণা করছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ‘নির্দিষ্ট হামলা’ চালিয়ে হামাস কমান্ডারকে হত্যা করেছে। মোহাম্মদ আবু হাসনা রাফাহ এলাকায় হামাসের সামরিক শাখার ‘কমব্যাট সাপোর্ট অপারেটিভ’ ছিলেন বলে ইসরায়েলের অভিযোগ।
দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে বর্তমানে আনুমানিক ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি অবস্থান করছেন। তারা ইসরায়েলের আক্রমণ থেকে বাঁচতে গাজার অন্যান্য স্থান থেকে এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান এবং স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। হামলায় সেখানকার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনে এখন পর্যন্ত ৩১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এ ছাড়া হামলায় ৭২ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।