শৃঙ্খলায় না ফেরা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে : মেয়র তাপস

শৃঙ্খলায় না ফেরা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে : মেয়র তাপস

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, অবৈধ ভবন ও রেস্তোরাঁয় অভিযান পরিচালনা করে যেখানে সমস্যা পাওয়া যাবে, প্রাথমিকভাবে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। শৃঙ্খলায় না ফেরা পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আজ বুধবার (৬ মার্চ) রাজধানীর মতিঝিলের সাউথ পয়েন্ট নগর ব্যায়ামাগার উদ্বোধন করতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, একটি দুর্ঘটনা ঘটলে, পরে দায়সারা তদন্ত হয়। ফলে কে অপরাধী সে দায়ভার নির্ধারণ হয় না। যার কারণে তারা পার পেয়ে যান। এতে বারবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে মানুষের মুখের কথায় একজনের উপর আরেকজনের দায়ভার চাপানোর অপচেষ্টা না করে আইনের আওতায় যেভাবে দায়ভার নির্ধারণ করা হয় সেটি করতে হবে।

বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিটি করপোরেশনের দায়ভার রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাব মেয়র তাপস বলেন, বেইলি রোডের দুর্ঘটনায় আমরা অত্যন্ত শোকাহত। এখানে ৪৬টি তাজা প্রাণ চলে গেছে। আমরা অত্যন্ত মর্মাহত এবং জাতি শোকাহত। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্নভাবে ঢালাওভাবে দায়ভার এবং দোষারোপ করার একটি অপউদ্যোগ চলছে। এটি বিভিন্নভাবে বিভিন্ন মহল করছে। আসলে দায়ভার বা দায়িত্ব এটা নির্ণয় করবে আইন। এখানে কেউ ঢালাওভাবে কিছু বললে আইনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং সেটাকে প্রভাবিত করবে। সুতরাং আমি সকলকে অনুরোধ করব, তথ্য-উপাত্ত ছাড়া সঠিকভাবে না জেনে ঢালাওভাবে দোষারোপ বা দায়ভার দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। সারা বিশ্বে আইনগতভাবেই এগুলো নির্ধারিত। আইন বলে, যে কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তার জন্য যে সংস্থা দায়িত্বশীল তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশ স্বাভাবিকভাবেই আমরা আমাদের আইনগুলো ব্রিটিশ সরকারের আইনটাই এখন পর্যন্ত ব্যবহার করছি। আমরা যদি বেইলি রোডের দুর্ঘটনা দেখি তাহলে দেখব যে, সেখানকার সিঁড়িটি প্রশ্রস্ত ছিল না। একটি ৯ থেকে ১০ তলা ভবন নির্মাণ করতে হলে বেশ কিছু ইমারত বিধিমালা মানতে হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই বিধিমালা প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম দায়ভার কার? এখানে প্রথম দায়ভার হচ্ছে একজন স্থপতির। যিনি এই ভবনের নকশা তৈরি করেছেন। কারণ বাড়ির মালিক তার কাছে পেশার সেবা নিতে যাচ্ছেন। সারা বিশ্বের আইনে বলা আছে যিনি পেশার সেবা দেবেন তাকে বিশেষভাবে যথাযথ আইনের নীতিমালাগুলো পরিপালন করতে হবে। দশতলা ভবনে কতটুকু প্রশস্ত সিঁড়ি থাকার কথা সেটি ওই পেশাদার স্থপতির জানার কথা। সেখানে কয়টি সিঁড়ি থাকবে সেটা ওই স্থপতিই ঠিক করে দেবেন। সেখানে ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী কি কি সুবিধা থাকতে হবে, কতটুকু জায়গা ছাড়তে হবে, সিঁড়ি কতটি হবে এবং কতটুকু প্রশস্ত হবে এই সবকিছুর দায় সেই স্থপতির উপর বর্তায়। সে হিসেবে প্রথম দায়ভার হচ্ছে স্থপতির।

দ্বিতীয় দায়ভার হচ্ছে যে এই নকশাটা অনুমোদন করছেন তার। তাকে দেখতে হবে নকশাটা সরকারের বিধিমালা অনুযায়ী হয়েছে কিনা। এখানে যদি কোনো অবহেলা বা গাফিলতি থাকে তাহলে সেটি সেই কর্তৃপক্ষের দায়ভার হবে।

এর পরের ধাপে আসলে আমরা দেখতে পাই ভবন নির্মাণে কিছু ছাড়পত্র নিতে হয়। যেসব কর্তৃপক্ষ এসব ছাড়পত্র দিয়েছেন এর পরের দায় তাদের উপর বর্তাবে।

মেয়র আওা বলেন, এখানে তাদের অবহেলা বা গাফিলতি আছে কি না, সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে আইন। আবার এখানে মালিক পক্ষের দায়ভারও রয়েছে।

তাই ঢালাওভাবে কারো ওপর দায় না চাপিয়ে তদন্তে করা উচিত উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, দায়সারা তদন্ত হয়। আইনের আওতায় ও নির্দিষ্ট দায়ভার নির্ধারণের তদন্ত সচরাচর দেখি না। সেজন্য আমি সকলকে অনুরোধ করব যেন, তদন্ত কমিটি করে এই দায়ভার নিশ্চিত করা এবং তার মাধ্যমে ব্যবস্থা নিয়ে বিচার সম্পন্ন করা হয়। একটি নজির যদি আমরা স্থাপন করতে পারি তাহলে আশা করতে পারি ভবিষ্যতে এরকম দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা কিংবা এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর