দ্বিতীয়বার মঙ্গলবার রাতের (১৬ অক্টোবর) বিতর্কে রমনিকে নাস্তানাবুদ করে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওই বিতর্কের উত্তপ্ত বাক্যবাণের রেশ কাটিয়ে না উঠতেই আবারও কথার তীব্র শ্লেষে বিদ্ধ করলেন রক্ষণশীল প্রতিদ্বন্দ্বীকে।
শুক্রবার ওয়াশিংটনের অদূরে অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনী সমাবেশে মূলত ইদানিং দেওয়া রমনির বক্তব্যগুলোকেই আক্রমণ করে বাক্যবাণের তুবড়ি ছোটান ওবামা।
একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে সমবেত সমর্থকদের সামনে রমনির দেওয়া সাম্প্রতিক বক্তব্যকে অসংলগ্ন উল্লেখ করে রমনির বর্তমান মানসিক অবস্থাকে ‘রমনেশিয়া’ বিশেষণে ভূষিত করেন।
রমনি তার পূর্বের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, রমনির বর্তমান বক্তব্যে তার পূর্বের বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত নীতি প্রতিফলিত হচ্ছে।
বক্তব্য রাখার সময় হাস্যোজ্জ্বল কিন্তু আক্রমণাত্মক ওবামা বলেন, “মিস্টার চরম রক্ষণশীল (রমনি) জনগণকে বোঝাতে চান, গত বছর তিনি যা বলেছিলেন তা ছিল চরম বালখিল্য।”
উপস্থিত নয় হাজার সমর্থকের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ম্যাসাচুসেটসের সাবেক গভর্নরের দাবি, তিনিই রক্ষণশীল টি পার্টি আন্দোলনের সবচেয়ে উপযুক্ত প্রার্থী। কিন্তু এখন যেন হঠাৎ করে ভোল পাল্টে ফেলেছেন তিনি। নিজেকেই প্রশ্ন করছেন, তিনি কি অথবা কে। এ সময় হাসিতে ফেটে পড়ে উপস্থিত জনতা।”
নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে ওবামা বলেন “আমি আসলে বোঝাচ্ছি, ইদানিং দেওয়া বক্তব্যের খুব বেশি অবস্থান পরিবর্তন করছেন তিনি। ভুলে যাচ্ছেন অতীতে কি বলেছিলেন। এড়িয়ে যাচ্ছেন পূর্বে বলা অনেক কথাই।”
এ পরিস্থিতিকে ব্যঙ্গ করে ওবামা বলেন, “তিনি যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তার একটি নাম দিতে পারি আমরা। এটাকে ‘রমনেশিয়া’ নামে ডাকলেই ভালো হয়।”
পাশাপাশি নারী অধিকার, ধনীদের জন্য করকর্তন এবং কয়লাশিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে রমনির দেওয়া বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে ওবামা বলেন, “তার এখনকার বক্তব্য যেন আগে রাখা বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত।” ওবামার বক্তব্যের পরপরই টুইটারে ঝড় বয়ে যায় ‘রমনেশিয়া’য়।
ওবামার এই হঠাৎ আক্রমণাত্মক মেজাজ কিছুটা অবাক করেছে বিশ্লেষকদের। গত দুই বছরে কোনো নির্বাচনী বক্তব্যে রমনির উদ্দেশ্যে এতটা আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেননি তিনি। এমনকি বিরোধীদের বিভিন্ন বিদ্রুপ এবং আক্রমণাত্মক টিটকারি এতদিন স্বভাবসুলভ বিনয় সহকারেই পাশ কাটিয়ে গেছেন তিনি।
তবে নির্বাচনের মাত্র ১৮ দিন সামনে রেখে ওবামার এই আক্রমণাত্মক মন্তব্য যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে উত্তেজনার পারদ বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ, তা বলাই বাহুল্য।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের তৃতীয় পর্বে এই দুই ভদ্রলোক আগামী সোমবার শেষবারের মতো মুখোমুখি হবেন ফ্লোরিডায়। এবারের বিষয় হবে ‘বৈদেশিক নীতি।’