কক্সবাজারের রামুতে ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে বৌদ্ধবিহার ও বসতিতে সহিংসাতার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ২টি মন্দিরে ১ লক্ষ টাকা অনুদার প্রদান করেছে। রবিবার বিকাল ৩ টায় পুলিশ সুপার সেলিম মোঃ জাহাঙ্গীর প্রজ্ঞমিত্র বনবিহারের ভান্তে সারোমিত্র ভিক্ষু ও আর্য্যবংশ বৌদ্ধ বিহারের প্রতিনিধি দীপক বড়�য়ার কাছে ক্ষতিগ্রস্থ ওই দু�টি মন্দিরের জন্য নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা করে ১ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। ওসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ পুলিশের বেশ ক�জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ পুলিশের মহা পরিদর্শক জনাব হাসান মাহামুদ খন্দকর, বিপিএম, পিপিএম, এনডিসি রামু, উখিয়া ও টেকনাফের ক্ষতিগ্রস্থ বিহার ও ঘরবাড়ী সমূহ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে আইজিপি প্রজ্ঞামিত্র বনবিহার ও আর্য্যবংশ বৌদ্ধ বিহারে অনুদান দেয়ার প্রতিশ্র�তি দেন।
দুর্গোৎসবের মহাষ্টমী আজ
এফএনএস (বলরাম দাশ অনুপম; কক্সবাজার) : হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসবের আজ তৃতীয় দিন। আজ অনুষ্ঠিত হবে মহাঅষ্টমী পূজা। প্রতিদিনের মতো আজও মণ্ডপে মণ্ডপে দেবীর পাদপদ্মে পূজা-অর্চনার পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে ২১ অক্টোবর ছিল মহা সপ্তমী। সপ্তমীর দিনে দেবী দুর্গার পাদপদ্মে অঞ্জলী প্রদানের জন্য সকাল থেকে মন্ডপে মন্ডপে ছিল পুজারীদের ভীড়।
মহাসপ্তমীর দিনে দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ ও সপ্তমীবিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ২২ অক্টোবর মহা অষ্টমীর দিনে রাত্রি ঘ-১১/৪৭ গতে সন্ধি পূজারম্ভ, রাত্রি ঘ-১/১১ গতে বলিদান, রাত্রি ১/৩৫ মধ্যে সন্ধি পূজা সমাপন হবে। এদিকে সপ্তমীর সকালে পূজা অর্চনা শেষে, সন্ধ্যায় যখন আরতি শুরু হয়, তখন থেকে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সকল বয়সের নর-নারীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠে শহরসহ গ্রামাঞ্চলের পুজা মন্ডপগুলো। শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী (২১ অক্টোবর) দিনে টেকনাফ ও উখিয়ার পুজা মন্ডপ পরিদর্শন এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেছেন কক্সবাজার জেলা পুজা উদ্যাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দরা। এছাড়া কক্সবাজার শহরসহ জেলার প্রত্যেক পুজা মন্ডপের মনিটরিং করছেন জেলা পুজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট রনজিত দাশ ও সাধারন সম্পাদক বাবুল শর্মার নেতৃত্বে জেলা ও উপজেলা পুজা কমিটির সকল কর্মকর্তা ও সদস্যরা। রবিবার সকালে জেলা পুজা উদ্যাপন পরিষদের সহ-সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠুর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি প্রথমে টেকনাফের ডেইল পাড়া দুর্গা মন্দির, শামলাপুর বিঞ্চু মন্দির, নাথমুরা পাড়া পুজা মন্ডপ, হৃীলা কালী বাড়ি পুজা মন্ডপ পরিদর্শন শেষে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরহাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। এরপর বিকেলে উখিয়া দারোগা বাজার পুজা মন্ডপ, কাশিয়ার বিল পুজা মন্ডপ, রুমখাঁ বাজার হরি মন্দির, ধুরুমখালী পুজা মন্ডপ পরিদর্শন এবং উখিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুজা উদ্যাপন পরিষদের কর্মকর্তা বিপ্লব মল্লিক শুভ, মিলন দাশ, টেকনাফ উপজেলা পুজা কমিটির আহবায়ক শিবুপদ ভট্টাচার্য্য, উখিয়া উপজেলার আহবায়ক স্বপন শর্মা রনি, সদস্য সচিব রুপম দেওয়ানজী, পুজা মন্ডপের কর্মকর্তা রতন কান্তি দে, পিকলু দত্ত, মিলন আইচ, দীপক সেন, সনজিত শীল। আজ মহাষ্টমীর দিনে মন্ডপে মন্ডপে উচ্চারিত হবে �যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা, নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ�। সন্ধ্যার পর থেকে মন্ডপে মন্ডপে বেজে উঠবে ঢাক-ঢোল-শঙ্খ আর কাঁসার শব্দ। নেচে গেয়ে পুজা উদ্যাপন করবেন সকলে। এদিকে দুর্গোৎসবকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, আনসার নিয়োগ করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা পুজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক বাবুল শর্মা জানান, যে জগতমাতাকে (দেবী দুর্গা) আমরা আরাধনা করি তিনি সকল নারীর মধ্যে মাতৃরূপে আছেন। এ উপলব্ধি সকলের মধ্যে জাগ্রত করার জন্যই কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। দুর্গা মাতৃভাবের প্রতীক আর কুমারী নারীর প্রতীক। কুমারীর মধ্যে মাতৃভাব প্রতিষ্ঠাই এ পূজার মূল লক্ষ্য।
খুটাখালীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা মহাষষ্ঠী ও সপ্তমী দিয়ে শুরু হয়েছে। দেবী বোধনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে ৫দিন ব্যাপী দূর্গাপূজা। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাব গম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে খুটাখালী জলদাশ পাড়ায় মহামায়া দূর্গতিনাশিনী দেবী দূর্গাকে ভক্তিভরে বরণ করে নিয়েছেন খুটাখালীর হিন্দু নর-নারী। হিন্দু ধর্ম মতে, এবার দেবী দূর্গা আসছেন উদার হাত নিয়ে। হাতির পিঠে করে মা দূর্গার আগমণ ঘটেছে। তাই সাথে করে নিয়ে আসছেন প্রচুর খাবার-দাবার। এ জন্য এবার কোন খাদ্য কষ্ট দেখা দেবেনা। কেউ অনাহারে থাকবেনা। সন্তানদের নিয়ে ৫দিন থেকে মা দূর্গা স্বামীর গৃহ কৈলাশে ফিরবেন নৌকায় ছড়ে। এ জন্য সামান্য ঝড় বৃষ্টি হতে পারে। গতকাল রবিবার খুটাখালী জলদাশ পাড়ার পূঁজা মন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে উৎসবের আমেজ। রংবেরংয়ের সাজানো হয়েছে পূজা মন্ডপকে। চারদিক শারদোৎসবে মাতোয়ারা। খগড়-কৃপাণ,চক্র-গদা, তীর-ধনুক আর ত্রিশুল হস্তে শক্তি রুপেন দূর্গতি নাশিনী দেবী দূর্গা মন্ডপে ঠাঁই নিয়েছেন। নমস্তসৌ- নমস্তসৌ-নমোঃ-নমোঃ মন্ত্রোচ্ছারণে জেগে উঠছেন দেবী দূর্গা। ৫দিন ব্যাপী দূর্গা উৎসবের মধ্যে ২০ অক্টোবর শনিবার মহাষষ্ঠী, রবিবার মহাসপ্তমী, সোমবার মহাষ্টমী,মঙ্গলবার মহানবমী এবং ২৪ অক্টোবর বুধবার বিজয়াদশমী ও প্রতিমা বির্সজনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে উৎসব। জেলে পাড়া মন্ডপের ব্রক্ষচারী আশিষ চক্রবর্তী ও শেকর চক্রবর্তী জানান, দূর্গতিনাশিনী র্দূগা সবার মঙ্গলের জন্য আসছেন। মা দূর্গা হচ্ছেন আদ্য শক্তি। দেবী ভগবতি, তার বহুরূপ। অসুরকে বধ করেছিলেন বলে তার অন্য নাম দূর্গা।