জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) পুনর্গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমিটির চেয়ারপারসন এবং অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিকল্প চেয়ারপারসন হয়েছেন।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) এ কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বাংলাদেশ সরকার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) গঠন করেছে।
১৫ সদস্যের কমিটির কার্যপরিধি মোট ৭টি বিষয়ে বিভক্ত।
এগুলো হলো:
সকল বিনিয়োগ প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) বিবেচনা ও অনুমোদন: এই কার্যাবলির মাধ্যমে কমিটি সকল বিনিয়োগ প্রকল্পের ডিপিপি পর্যালোচনা করে এবং এর সার্বিক বিষয়গুলো বিবেচনা করে। কমিটি প্রকল্পটির বাস্তবায়ন সম্ভব কিনা, এর অর্থনৈতিক প্রভাব কী হবে, এর জন্য কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে, ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করে।
সরকারি খাতে ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে মোট বিনিয়োগ ব্যয় সংবলিত প্রকল্পগুলোর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার সুপারিশ বিবেচনা ও অনুমোদন: এই কার্যাবলির মাধ্যমে কমিটি সরকারি খাতে ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে মোট বিনিয়োগ ব্যয় সংবলিত প্রকল্পগুলোর জন্য পিইসি কর্তৃক প্রণীত সুপারিশ বিবেচনা করে। কমিটি সুপারিশগুলোর যৌক্তিকতা ও বাস্তবসম্মততা বিবেচনা করে এবং এর আলোকে প্রকল্পটি অনুমোদন বা অনুমোদন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা: এই কার্যাবলির মাধ্যমে কমিটি সকল বিনিয়োগ প্রকল্পের বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে। কমিটি প্রকল্পগুলোর নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা, এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সরবরাহ হচ্ছে কিনা, ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করে।
বেসরকারি উদ্যোগ, যৌথ উদ্যোগ অথবা অংশগ্রহণমূলক বিনিয়োগ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব বিবেচনা: এই কার্যাবলির মাধ্যমে কমিটি বেসরকারি উদ্যোগ, যৌথ উদ্যোগ অথবা অংশগ্রহণমূলক বিনিয়োগ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব বিবেচনা করে। কমিটি প্রস্তাবগুলোর যৌক্তিকতা ও বাস্তবসম্মততা বিবেচনা করে এবং এর আলোকে প্রস্তাবগুলো অনুমোদন বা অনুমোদন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিবীক্ষণ এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নীতি-নির্ধারণী বিষয়সমূহ পর্যালোচনা: এই কার্যাবলির মাধ্যমে কমিটি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিবীক্ষণ করে। কমিটি অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের অবস্থা, অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, ইত্যাদি বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে। কমিটি সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নীতি-নির্ধারণী বিষয়সমূহও পর্যালোচনা করে।
বৈদেশিক সহায়তার বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনা ও অনুমোদন এবং এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অগ্রগতি পর্যালোচনা: এই কার্যাবলির মাধ্যমে কমিটি বৈদেশিক সহায়তার বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনা ও অনুমোদন করে। কমিটি বৈদেশিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা, বৈদেশিক সহায়তার মাধ্যমে কী কী লক্ষ্য অর্জন করা হবে, ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করে। কমিটি বৈদেশিক সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অগ্রগতিও পর্যালোচনা করে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, কমিটির বৈঠক প্রয়োজনানুসারে অনুষ্ঠিত হবে। পরিকল্পনা বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
এই কমিটির মাধ্যমে সরকার সকল বিনিয়োগ প্রকল্পের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে চায়। কমিটির মাধ্যমে সরকার দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও নীতি-নির্ধারণী বিষয়সমূহ পর্যালোচনা করতে পারবে। এছাড়াও, কমিটির মাধ্যমে সরকার বৈদেশিক সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে পারবে।