এসএমই প্রকল্পের বৈদেশিক ঋণ ছাড় নিয়ে দু�মেরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

এসএমই প্রকল্পের বৈদেশিক ঋণ ছাড় নিয়ে দু�মেরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) প্রকল্পের দাতা গোষ্ঠি জাইকার ৪শ� কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণ ছাড় নিয়ে দু�মেরুতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সরকারি এ দুটি সংস্থার রশি টানাটানিতে এ টাকা ছাড় হচ্ছে না। বৈদেশিক ঋণের অর্থ ছাড় নিয়ে বাংলাদেশের এ ধরনের পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাপানভিত্তিক ঋণ দাতা সংস্থা জাইকা। পাশাপাশি ঋণের টাকা ছাড় না হওয়ায় দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণ বিতরণ কার্যক্রমে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শুধু তাই নয়, এ কারণে ব্যাহত হচ্ছে দেশের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে� এসএমই প্রকল্পে জাইকার টাকা ছাড় করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখার অনুমতি লাগবে। পক্ষান্তরে অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, এসএমই খাতে জাইকার টাকা বাজেটের উন্নয়ন কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত নয়। এ কারণে এ অর্থ ছাড়ে  অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখার অনুমতির প্রযোজন নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ফিন্যান্সিয়াল সেক্টও প্রজেক্ট ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অফ স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম সাইজড এন্টারপ্রাইজ� শীর্ষক প্রকল্পে প্রায় ৪শ� কোটি টাকা ঋণ দিতে জাপানের দাতা গোষ্ঠি জাইকা গতবছর সরকারের সাথে চুক্তি করে। গত জুলাই মাসেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের অর্থ ছাড়ের কথা ছিল। ইতিমধ্যে মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালকও একাধিকবার অর্থ ছাড়ের জন্য আবেদন করেছে। কিন্তু অর্থ ছাড় হচ্ছে না। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ অর্থ মন্ত্রণালয়েল অনুমতি ছাড়া অর্থ দিতে রাজি নয়। বরং অভিযোগ উঠেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসএমই খাতের বৈদেশিক ঋণের অর্থ ছাড়ের বিষয়ে দ্বিমুখী নীতি অনুসরণ করছে। ফলে জাইকার অর্থ ছাড় নিয়ে অহেতুক জটিলতা দেখা দিয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের এসএমই খাতের ঋণ বিতরণ কার্যক্রম।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিপূর্বে এসএমইএসডিপি নামে একই ধরনের একটি প্রকল্পে দাতা গোষ্ঠি এডিবির বৈদেশিক ঋণ দিয়েছিল। সে অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থ বিভাগের কোনো অনুমতির প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু জাইকার ঋণের অর্থ ছাড়ের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফরেন রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ (এফআরটিএমডি) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আচরণকে এফআরটিএমডি�র সমন�য়হীনতা হিসেবে আখ্যায়িত করছে। এ পরিস্থিতিতে বৈদেশিক ঋণের অর্থ ছাড়ের জটিলতা নিরসনে অর্থ মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ইতিপূর্বে এডিবি অর্থায়নপষ্ট এসএমইএসডিপি প্রকল্পের অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে যে নীতি অনুসরণ করা হয়েছিল তা অনুসরণ করে অভ্যন্তরীণ সমন�য়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিত্তির পরামর্শ দিয়েছে। তার তা না হলে জাইকা থেকে এ প্রকল্পের আওতায় ২০১২-�১৩ অর্থবছরে অর্থ প্রাপ্তির জন্য জরুরি ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোরও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, এসএমই প্রকল্পের অর্থ ছাড় না হওয়ায় চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে জাইকার পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। পাশাপাশি ঋণের অর্থ ছাড়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে ওই চিঠিই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজ অবস্থান থেকে সওে আসেনি। বিদ্যমান এ জটিলতা নিরসনে চলতি মাসেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে আবারো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে।

অর্থ বাণিজ্য