সক্রিয় হচ্ছেন প্রধান দু’দলের নিষ্ক্রিয়রা

সক্রিয় হচ্ছেন প্রধান দু’দলের নিষ্ক্রিয়রা

দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নিষ্ক্রিয় ও অবহেলিত নেতারা আবার সক্রিয় হচ্ছেন। ফিরছেন দলের মূল নেতৃত্বে। এজন্য তারা নিজেরা যেমন সক্রিয় হচ্ছেন, তেমনি তাদের মূলস্রোতে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছেন হাইকমান্ডের দায়িত্বশীল নেতারাও। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখেই এমন উদ্যোগ বলে আভাস দিয়েছে দলীয় সূত্র।

এ তালিকায় বিএনপি নেতাদের মধ্যে রয়েছেন আশরাফ হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) জেডএ খান, শেখ রাজ্জাক আলী, তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী, জহিরউদ্দিন স্বপন, সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল, শহিদুল হক জামাল, সুরঞ্জন ঘোষ, মফিকুল ইসলাম তৃপ্তি ও মাসুদ অরুণসহ শতাধিক চেনামুখ।

একইভাবে আওয়ামী লীগের নিষ্ক্রিয় নেতা মুকুল বোস, অধ্যাপক আবু সাইদ, খ ম জাহাঙ্গীর, সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর, আব্দুল মান্নান, আসাদুজ্জামান নূর, পঞ্চানন বিশ্বাসসহ শতাধিক নেতা এখন সক্রিয় হচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুর্দিনে দল ছেড়ে যাওয়া এসব নেতা আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়টি মাথায় রেখে এলাকায় যাওয়া শুরু করেছেন। অনেকে এলাকায় গিয়ে পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গেও নতুন করে যোগাযোগ গড়ে তুলছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।

ওয়ান-ইলেভেনের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিরোধী দল বিএনপির তৎকালীন মহাসচিবসহ অধিকাংশ নেতা সংস্কারের পক্ষে চলে গিয়েছিলেন। তখন সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছিলেন দলের নেতা খালেদা জিয়া ও তার বিশ্বস্ত নেতা-কর্মীরা।

ওই সময়ে দল থেকে সরে থাকা নেতা-কর্মীদের অনেকেই পরে দলে ফিরলেও কোনঠাসা অবস্থায় দিন পার করতে হচ্ছিলো তাদের। এখন এসে তাদের সেই কোনঠাসা অবস্থা যেমন কেটে যাচ্ছে, তেমনি এতোদিন দূরে থাকা নেতারাও সুযোগ পাচ্ছেন মূলধারায় ফেরার।

একইভাবে ওয়ান-ইলেভেনের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই সংস্কারপন্থি বনে যান। শেখ হাসিনা মুক্ত হওয়ার পর তাদের কপাল পুড়তে শুরু করে। পরবর্তী নির্বাচনে এদের অনেককে মনোনয়ন দেওয়া হলেও ২০০৮ সালের কাউন্সিলে তাদের এড়িয়েই জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়।

নিবার্চনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলেও সিনিয়র নেতাদের অধিকাংশই মন্ত্রিসভার বাইরে থেকে যান।

তাদের রাজনীতিতে ফের সক্রিয় করতে নতুনভাবে পদ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানাচ্ছে দলীয় সূত্র। এমনকি কাউকে কাউকে দেওয়া হচ্ছে মন্ত্রিত্বও।

এদের মধ্যে এতোদিন অবহেলিত অবস্থায় থাকা নেতা তোফায়েল আহম্মেদকে প্রায় চার বছর পর মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। যদিও তিনি মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন নি।

এদিকে আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতা আব্দুল জলিল ও আমির হোসেন আমুকে জাতীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে গেলো সপ্তাহে। ঈদের পর তারা মন্ত্রী হচ্ছেন বলেও গুঞ্জন আছে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা মুকুল বোস বলেন, “দলের ফেরা চেষ্টা করছি। দলের জন্য সারা জীবন কাজ করেছি । এখন এভাবে দূরে থাকাটা কি কারও ভাল ভাল লাগার কথা।”

তিনি বলেন, “নেত্রীর ইঙ্গিত পেলেই আবার সষ্ক্রিয়ভাবে কাজ করবো।”

এ ব্যাপারে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে স্বীকার করে মুকুল বোস বলেন, “অনেকের সঙ্গেই কথা হয়। আমি নিজেও যোগাযোগ করি। আবার অন্যরাও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন।”

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, “আগেও দলে ছিলাম, এখনও আছি। তবে বিভিন্ন কারণে ব্যাস্ত থাকায় সক্রিয় থাকা সম্ভব হয় নি।”

এদিকে দুই দলের দুই প্রধান নেতাও সবাইকে অতীতের ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানাচ্ছেন।

রাজনীতি