সরকারি দলীয় প্রার্থী হওয়াতে নিজের হাত পা বাধা জানিয়ে শামীম ওসমান দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বললেন, “নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে জেনেও আমার কিছুই করার নেই।” নির্বাচন কেন্দ্রে পুলিশ অর্থের বিনিময়ে অপর প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে ভোটারদের প্রভাবিত করেছে এমন অভিযোগ এনে তিনি একথা বলেন।
রোববার দুপুর তিনটা বিশ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ রাইফেলস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এসময় শামীম ওসমান ‘বড় বিষ জ্বালা এ বুকে’ বলে আক্ষেপ করেন।
শামীম ওসমান এ সময় বলেন, “আমি সরকার দলীয় সমর্থিত একজন প্রার্থী। এইজন্য অনেক কিছু বলতে চাইলেও সরাসরি বলা যায় না। কিছু দায়দায়িত্ব আমার কাঁধে এসে পড়ে। অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে জানাচ্ছি, “অনেকে অনেক জল্পনা কল্পনা করেছিল, নির্বাচনে শামীম ওসমান কেন্দ্র লুট করে নিয়ে যাবে। অনেক কথা বলা হয়েছে। কিছুই কিন্তু হয়নি।”
সকাল সাড়ে দশটা পর্যমত্ম নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে শামীম ওসমান বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়ম দেখেছেন জানিয়ে বলেন, “সকাল সাড়ে আটটায় সোনাকান্দা ডকইয়ার্ড কেন্দ্রে আমাদের কিছু মহিলা ভোটার গেছেন। তাদের দোয়াত কলম মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য পুলিশ প্রভাবিত করেছে।” সিদ্ধিরগঞ্জের বেশ কিছু ভোটকেন্দ্রে পুলিশের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনেন তিনি।
এই নির্বাচনে টাকা খেয়ে পুলিশ নির্দিষ্ট একজন প্রার্থীর হয়ে কাজ করছে বলে শামীম ওসমান অভিযোগ করলেও তিনি কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা ভোটারদের যে প্রভাবিত করেছেন এই বক্তব্যের পক্ষে জোর দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের পরিচিত এক ভোটারকে পুলিশ আইভীর পক্ষে ভোট দিতে বলেছে “
সরকার দলীয় প্রার্থী হয়েও তিনি কেন নির্বাচন কমিশনে কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি- এমন পশ্নের জবাবে শামীম বলেন, “নির্বাচন কমিশন কোনো অভিযোগকেই আমলে নেয় না। গতকালও (শনিবার) আমি তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো ফলাফল পাইনি।”
নির্বাচনী এলাকায় সেনা মোতায়েনের কথা বলে পরবর্তীতে ব্যর্থ হওয়াই শামীম ওসমান নির্বাচন কমিশনের কর্মদক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেও ফলাফল মেনে নিতে কোনো আপত্তি নেই শামীম ওসমানের। কারচুপির ঘটনা ঘটেছে এই অভিযোগ জানার পরও তিনি বলেন, “যদি ৫০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রেও কারচুপির ঘটনা ঘটে তাহলেও আমি জয়ের আশাবাদী।”
সাংবাদিক সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে ১/১১ এর হোতারা এবং বিএনপি জামায়াত চক্র মিলে খেলা খেলছে বলেও অভিযোগ করেন শামীম ওসমান।
সংবাদ সম্মেলনের আগে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে জালভোট চলছে শোনার পর শামীম ওসমান সেখানে যান। তখন ভোট কারচুপির অভিযোগে র্যাব লিটন নামে একজনকে গ্রেফতার করে। এসময় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সামনে শামীম সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে শ্লোগান দিতে থাকে।
নির্বাচন কেন্দ্রের সামনে দাড়িয়ে শামীম ওসমান বলেন, “আমি যদি সরকার দলীয় প্রার্থী না হতাম, তাহলে এই নারায়ণগঞ্জে ১৫ মিনিটের মধ্যে ৫ লাখ লোক এতক্ষণে রাস্তায় নামতো।”