তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশ আজকে বদলে গেছে। এই রাঙ্গুনিয়ার চিত্র আপনারা একটু মনে করে দেখুন, ১৫ বছর আগে উত্তর রাঙ্গুনিয়ার শেষ প্রান্ত থেকে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার শেষ প্রান্তে যেতে সকালে শুরু করলে বিকাল গড়িয়ে যেতো। সঙ্গে জিনিসপত্র নিয়ে যেতে হতো। সড়কগুলোর এমন করুণ অবস্থা ছিল মানুষের কোমর ব্যথা হয়ে যেতো। বর্তমানে রাঙ্গুনিয়ার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টায় পৌঁছা যায়। এটাই আমাদের উন্নয়ন।
আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় র্যালি পূর্ব পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার প্রদক্ষিণ করে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র গেট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষজন অংশ নেন।
বর্তমানে গ্রামের ছেলে আর শহরের ছেলের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বরং গ্রামের ছেলেগুলো আরও বেশি স্মার্ট। গ্রামের সবার বাড়িতে বাড়িতে টেলিভিশন-ফ্রিজ ও ইন্টারনেটের লাইন, এগুলো আগে ছিল না। এগুলো সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে।
হাছান মাহমুদ বলেন, সকাল ৮টায় ঘুম থেকে উঠে রাতের ২টার আগ পর্যন্ত ঘুম নেই। একজন রাখাল যেভাবে খাটে, আপনাদের সন্তান হিসেবে আমি আপনাদের জন্য ১৬-২০ ঘণ্টা খাটাখাটনি করি। সবার জন্য কাজ করি। আপনাদের অনুরোধ জানাবো, রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী অংশে যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে, এগুলো আপনারা মাথায় রাখবেন। ৭ জানুয়ারি বাবা-মা, ভাইবোনকে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে যারা ভোট বর্জন করেছিল আমরা তাদের মুখে কালিমালেপন করে দেব।
সমগ্র দেশের মানুষ আজ নির্বাচনমুখী উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। এটি নির্বাচন বর্জনকারী ও প্রতিহতকারীদের মুখে চপেটাঘাত। আমরা যখন স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, তখন পাকিস্তানিদের অনেকে পরাজয়ের পর নিজেদের আত্মতুষ্টির জন্য বলেছিল, কালো-বেঁটে মানুষ, বোকা বাঙালিরা আমাদের থেকে ভাগ হয়ে গেছে; ভালোই হয়েছে। কিন্তু আজকে পাকিস্তানে আলোচনা হয় দয়া করে আমাদের বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। এখন বাংলাদেশ হতে চায় পাকিস্তান। অথচ আমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি। আজকে পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এটাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ রচনার এবং তার কন্যার দেশ পরিচালনার সার্থকতা।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের স্বাধীনতা-সংগ্রামে এই রাঙ্গুনিয়ার অনেক মানুষ জীবন দিয়েছেন। অনেককে কর্ণফুলী নদীর তীরে দাঁড় করিয়ে গুলি করে লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রঘোনায় পাকিস্তানিদের ক্যাম্প থেকে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নির্যাতন চালানো হতো। পদুয়া ইউনিয়নে একদিনে ১২০০ বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, উত্তরজেলা আওয়ামী লীগের নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মো. শাহজাহান সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার ও মো. ইদ্রিছ আজগর।