তুরস্কে প্রশিক্ষিত ইমামদের আর নেবে না জার্মানি

তুরস্কে প্রশিক্ষিত ইমামদের আর নেবে না জার্মানি

জার্মানির মসজিদগুলোয় তুরস্কের প্রশিক্ষিত ইমামদের নেওয়া হতো। কিন্তু এবার তা বন্ধ করা হচ্ছে। জার্মানদেরই ইমাম হিসেবে প্রশিক্ষিত করে তোলা হবে। এতে দেশের সঙ্গে তাদের সংহতি থাকবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ঘোষণা করেছে।
জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তুরস্কের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ দিয়ানেট ও ডিটিটিবি-র চুক্তি হয়েছে। প্রতিবছর ১০০ জার্মানিকে ইমামের প্রশিক্ষণ দেবে তারা। পশ্চিমের শহর ডালেমে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
জার্মানিতে এখন তুরস্কের এক হাজার জন ইমাম আছেন। তাদের পর্যায়ক্রমে সরিয়ে নতুন প্রশিক্ষিতদের নিয়োগ করা হবে। আর যাদের সরানো হবে, তাদের দিয়ানেট অন্যত্র নিয়োগ দেবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমরা এমন ধর্মীয় নেতা চাই, যারা আমাদের দেশকে জানে, আমাদের ভাষায় কথা বলে এবং আমাদের মূল্যবোধেকে সমর্থন করে। আমরা চাই ইমামরা বিভিন্ন ধর্মের মানুষদের সঙ্গে আলোচনা করুন এবং আমাদের সমাজে বিশ্বাস তৈরি করুন।’
জার্মানির ইমাম কনফারেন্স জানিয়েছে, জার্মানিতে ৫৫ লাখ মুসলিম বাস করেন। তারা মোট জনসংখ্যার ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। তাদের মতে, নতুন সিদ্ধান্ত জার্মানির মুসলিমদের মিলন ও যোগদানের ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে।
জার্মানিতে আড়াই হাজার মসজিদ আছে। তার মধ্যে ৯০০ মসজিদ ডিটিটিবি নিয়ন্ত্রণ করে। ডিটিটিবি হলো তুরস্কের প্রেসিডেন্সি অফ রিলিজিয়াস অ্য়াফেয়ার্সের একটি শাখা। তারাই জার্মানিতে সবচেয়ে বড় ইসলামিক সংস্থা। তাদের বিরুদ্ধে অভিয়োগ, তারা তুরস্ক সরকারের কথাতে ওঠাবসা করে।
সাম্প্রতিক বিতর্ক
ডিটিটিবিকে নিয়ে সম্প্রতি একটা বিতর্কও দেখা দিয়েছে। কোলনের একটি মসজিদে একজন আফগান তালেবান সদস্য গতমাসে ভাষণ দিয়েছিলেন। সেটা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়।
২০১৭ সালে জার্মান কর্মকর্তারা ডিটিটিবি-কে মৌলিক সংস্কার করতে বলেন। তখন অভিযোগ উঠেছিল, তারা যে ইমামদের নিয়োগ করে, তারা তুরস্কের হয়ে চরবৃত্তি করেন। তুরস্কে এর্দোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর এই অভিযোগ ওঠে। দিয়ানেট অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকের করেছে। এর্দোয়ান সরকারও জানিয়েছে, তারা এই নিয়ে তদন্ত কমিটি করেছিল। কিন্তু সেই কমিটি জানিয়েছে, এ রকম কোনো তথ্যই নেই।
সাবেক চ্যান্সেলর ম্য়ার্কেল ২০১৮ সালে প্রথমে জার্মানিতে জার্মান ইমামদের প্রশিক্ষণের কথা বলেন। তার যুক্তি ছিল, এই পদক্ষেপ জার্মানিকে এই বিষয়ে আরো স্বাধীন করবে। আর এটা জার্মানির ভবিষ্যতের জন্য জরুরি।
সূত্র : ডয়চে ভেলে

আন্তর্জাতিক শীর্ষ খবর