জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের চাকরিটা রিচার্ড পাইবাস করবেন কি করবেন না, তা অনেকটাই নির্ভর করছে তার ওপর। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) যতটা ছাড় দিতে রাজি আছে তাতে না পোষালে পাইবাসের হয়তো চাকরিটাই ছেড়ে দেবেন।
বাংলাদেশে কোচের চাকরির চেয়েও পাইবাসের কাছে তার পরিবার বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্য কাজের অতিরিক্ত একটি দিনও তিনি ঢাকায় থাকেন না। এমনকি ছুটির ব্যাপারে বিসিবির নিয়মের তোয়াক্কাও করেন না। বিসিবির চাকরিটি নেওয়ার পর থেকে তিনি ইচ্ছে মতো ছুটি ভোগ করছেন। জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক কোন কার্যক্রম না থাকলে তিনি চলে যান দক্ষিণ আফ্রিকায় পরিবারের কাছে। এখনও তিনি কেপ টাউনে আছেন। এই ভাবে বিসিবি তাকে ছুটি ভোগ করতে দিতে রাজি থাকলে তিনি চাকরি করবেন।
যদিও ছুটির ব্যাপারে বিসিবি পাইবাসকে খুব বেশি ছাড় দিতে পারবে না। জাতীয় দলের বাকি কোচিং স্টাফদের ওপর এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। অন্যরাও তখন প্রধান কোচের মতো ছুটিছাঁটার বায়না ধরবেন। বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের শুক্রবারের সভায় সে জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে নিয়মের ভেতরে থেকে চাকরি করতে হবে পাইবাসকে।
বিদায়ী সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল কোচের ইস্যুতে জানালেন, ‘পাইবাসকে আমরা আবারও আনুষ্ঠানিক ভাবে লিখবো তিনি যেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে আমাদের দেশে আসেন। তাকে আসার জন্য আমরা অনুরোধ করছি। তিনি না আসলে কি হবে পরে সিদ্ধান্ত নিয়ে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের জন্য পাইবাসকে ঢাকায় আসতে অনুরোধ করেছে বিসিবি। তিনি এলে আলোচনা করে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানের চেষ্টা করবে। আগামী ২৪ অক্টোবর নতুন সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সভাপতিত্বে আরেকটি সভা করবে বিসিবি। তার আগেই পাইবাসকে জানাতে হবে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজকে সামনে রেখে ঢাকায় আসছেন কি আসছেন না। এ সময়ের মধ্যে কোচের দিক থেকে ইতিবাচক কোন উত্তর না পাওয়া গেলে বিসিবির পরবর্তী সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারে। যদি বর্তমান কোচের পার্ট চুকিয়ে যায় তাহলে ২৪ অক্টোবরের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন কোচ নিয়োগ দেবে বিসিবি।
পরিবারেরর জন্য পাইবাস যে বাংলাদেশের চাকরিটা করতে পারবেন না বিসিবির কর্মকর্তারা তা অনেক আগেই বুঝে গিয়েছে। মোস্তফা কামাল বিষয়টি পরিষ্কারও করলেন সংবাদ ব্রিফিংয়ে, ‘পাইবাসের সঙ্গে আমাদের কোন বিরোধ নেই। পাইবাসের বিরোধ তার পরিবারের সঙ্গে। কারণ পাইবাস তার পরিবারকে রাজি করাতে পারেনি বাংলাদেশে আসার জন্য। তিনি একটা কথা আমাদের বারবার বলেছেন তার পরিবারকে এখানে আনতে হবে। আমিও তাকে অনেকবার অনুরোধ করেছি তুমি তোমার পরিবারকে নিয়ে আস। আমার অতিথি হয়ে একবারের জন্য হলেও তাদের আসতে বলো। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে তাদের রাজি করাতে পারেনি। সে জন্য তিনি যেটা বলেন সেটা আমরা মানতে পারবো না। তিনি ছুটি বাড়িয়ে দিতে বলছেন। কিন্তু ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া যাবে না। একজনের জন্য করলে অন্যদের জন্যও করতে হবে। এছাড়া আমাদের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কোন কারণ নেই।’
বিসিবি এক চিঠিতে পাইবাসকে অনুরোধ করেছে, কোন শর্ত ছাড়াই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের জন্য ঢাকায় আসতে। এখানে আসার পর আলোচনার টেবিলে বসবে। কিন্তু এতে পাইবাস রাজি নাও হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিসিবির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ‘পাইবাস বিসিবির শর্ত মেনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ করতে আসতে রাজি না। বরং তার এজেন্ট নতুন জায়গায় চাকরি খুঁজতে শুরু করে দিয়েছে।’