বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না : কাদের

বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না : কাদের

বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র চাইলেই একতরফা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে সরকারি দলের মুখপাত্র ওবায়দুল কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চাইলেও একতরফা সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের যে বন্ধুরা আছে তারা কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারে একতরফা কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার ব্যাপারে একমত না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র একতরফা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের টানাপোড়েন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেসব দেশ নিষেধাজ্ঞা দেবে বাংলাদেশ তাদের কাছ থেকে কোনো পণ্য নেবে না। সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনের পথে হাঁটছেন।
জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে জানাতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যেসব রাজনৈতিক দল আছে তাদের সাথে আমাদের সহযোগিতা, সম্পর্ক আরও জোরদারের তাগিদ অনুভব করছি। যে কারণে ১৪ দলের সাথে বৈঠক হয়েছে। জাতীয় পার্টির সাথে বসেছি। মূল বিষয় ছিল নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে গুপ্ত হামলা, গুপ্তহত্যা প্রতিহত করব ভোটারদের নিয়ে।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির দল হিসেবে অনেক কথাই বলতে পারে। রাজনৈতিক দলের হিসেবে নিজেদের শক্তিমত্তা প্রদর্শন করতে তারা তো চাইবেই। বাস্তবে কী হবে সেটি পরে দেখা যাবে। চাইতে তো কোনো দোষ নেই, আশা বড় থাকাই ভালো। আসন ভাগাভাগির বিষয়টা আমি জানি না। আসন ভাগাভাগি হয়েছে এমন কোনো আলোচনাও হয়নি। আমরা রাজনৈতিক আলোচনা করেছি।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা নিয়ে এত লুকোচুরি কেন? এ প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, লুকোচুরির বিষয় না। এটা নিয়ে এত ঢাক-ঢোল পেঠানোর কী আছে? নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় থাকা দরকার। কারণ, নির্বাচনবিরোধী শক্তিরা যে অপরাজনীতি করছে, সেটি মোকাবিলার জন্য আমাদের মধ্যে একটা সমন্বয় করা দরকার। কারণ, নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করা, নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করা, নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার অঙ্গীকার আমাদের রয়েছে। এজন্য আমরা আলাপ-আলোচনা করছি। এখানে লুকোচুরির কোনো ব্যাপার না। আমরা রাজনৈতিক বিষয়ে কথা বলেছি৷
বিএনপির অবোধ আন্দোলন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সিরাজগঞ্জে মুরগির বাচ্চা বহনকারী একটি কার্ভাডভ্যান পোড়ানো হয়েছে। এতে সাত হাজার মুরগির বাচ্চা পুড়ে গেছে। এখন মুরগির বাচ্চাও তাদের (বিএনপি) শত্রু। মুরগির বাচ্চাও তাদের টার্গেট। নাশকতা, গুপ্ত হামলার আজকের যে ভয়াবহ চিত্র, সেটা নতুন নতুন রেকর্ড স্থাপন করছে তারা।
কাদের বলেন, গতকাল পর্যন্ত পায় ৬০০ যানবাহন পোড়ানো হয়েছে। দশটি ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে। বিএনপির আন্দোলন-অগ্নিসন্ত্রাসে পুলিশবাহিনী সদস্য, পরিবহন শ্রমিক, রাজনৈতিক কর্মীসহ কয়েকজন মারা যাওয়ার পাশাপাশি ২৫০ জন মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এরা যখন মুরগির বাচ্চাকেও টার্গেট করেছে, এদের গুপ্ত হামলার টার্গেট আরো বিস্তৃত হতে পারে। আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। নির্বাচন বানচালের জন্য এরা মরিয়া হয়ে উঠছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, সেটি বানচালের জন্য ওরা ততই মরিয়া হয়ে উঠছে। মরণ কামড় দিতে চাইছে। সে কারণেই আজকে নির্বাচনমুখী যে রাজনৈতিক দল আছে, যাদের সঙ্গে আমাদের আগে জোট ছিল, মহাজোট ছিল, তাদের সঙ্গে আমরা আমাদের সহযোগিতা, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরো জোরদার করার তাগিদ অনুভব করছি। আমরা ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক করেছি, জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আলোচনা করেছি।
এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।

রাজনীতি শীর্ষ খবর