২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মুখোমুখি লড়াইয়ের তেজ ছড়িয়ে পড়েছিল মারাকানার গ্যালারিতেও। সমর্থকদের সহিংস আচরণের নিয়ন্ত্রণ নিতে সেদিন পুলিশের লাঠিচার্জও করতে হয়েছে। সবমিলিয়ে মাঠের বাইরের বিষয় সামলে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর সুপার ক্লাসিকো শুরু হতে বিলম্ব ঘটে প্রায় আধাঘণ্টা। যে ঘটনার রেশ এখনো কাটেনি, যা নিয়ে ফিফার শৃঙ্খলা কমিটি কাজ শুরু করেছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শাস্তি হতে পারে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দুই দলেরই।
গত বুধবার (২২ নভেম্বর) মারাকানা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে ম্যাচটি নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পর মাঠে গড়ায়। ম্যাচের আগে দুই দেশের সমর্থকদের মারামারি, পুলিশের লাঠিচার্জ করে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার এক পর্যায়ে দল নিয়ে বেরিয়ে যান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। পুরো অবস্থা স্বাভাবিক হলে তিনি আবার দল নিয়ে মাঠে ফিরেন।
এরপরই খেলা শুরু হয়। যেখানে নিকোলাস ওতামেন্ডির একমাত্র গোলে ব্রাজিলকে হারায় আর্জেন্টিনা। যার মাধ্যমে ৬৯ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্রাজিলকে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে হার উপহার দেয় আর্জেন্টিনা। মাঠে উভয় দলের খেলোয়াড়রা মিলে ৪২টি ফাউল করেন। যার ২৬টি করে ব্রাজিল ও ১৬টি করে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের শেষ দিকে ব্রাজিলের জোয়াল্টিনকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।
লাতিন আমেরিকার দুই দেশের এই বিষয়টি নিয়ে আগেই নিন্দা জানিয়েছিলেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তিনি বলেন, ‘ফুটবল মাঠে বা মাঠের বাইরের এই ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। খেলোয়াড়, সমর্থক, প্রতিযোগিতায় লিপ্ত দলগুলো এবং তাদের কর্মকর্তারা একটি নিরাপদ পরিবেশের দাবিদার।’
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে ফিফা বলেছে, ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ) ও আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনের (এএফএ) বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা কমিটি তাদের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
সংস্থাটির ভাষ্য অনুযায়ী, ব্রাজিল ‘অনুচ্ছেদ ১৭’-এর সম্ভাব্য বিধি লঙ্ঘন করেছে। যা ম্যাচের সময় শৃঙ্খলা রক্ষা এবং নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত। যদি এটি প্রমাণিত হয় তাহলে শাস্তি পেতে হবে ব্রাজিলকে।
অন্যদিকে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা দর্শকদের উত্যক্ত করা ও দেরিতে খেলা শুরু করায় ফিফার শৃঙ্খলাবিধির ১৭.২ ও ১৪.৫ লঙ্ঘণ করেছে। তাই প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তির ঘোষণা করা হবে।
তবে কার কি শাস্তি হতে পারে সেটি শৃঙ্খলা বিধিতে বলা নেই। এ বিষয়ে শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন করা হবে। খেলার মধ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত না করায় শাস্তি পেতে পারে ব্রাজিল। দর্শকদের উত্যক্ত করা ও দেরিতে খেলা শুরু করায় সাজা হতে পারে আর্জেন্টিনারও। দুই দলই আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনে সীমিত কিংবা পুরোপুরি দর্শকশূন্য মাঠে করারও সাজা পেতে পারে।