হলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারের জীবনে অনেক উত্থান-পতন আছে। তবে এক জীবনে তার প্রাপ্তির তালিকাও অনেক বড়। কিন্তু একটি আক্ষেপ তার থেকেই যাবে। তিনি কখনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না।
অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক অর্জনও কম নয় আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারের। ২০০৩-১১ সালের মধ্যে দুই মেয়াদে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু রাজনীতিবিদ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করলেও কখনো প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়তে পারবেন না। এর কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে গেলে অবশ্যই জন্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে। কিন্তু আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার তা নন। তার জন্ম অস্ট্রিয়ার থাল নামের একটি শহরে। ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত অস্ট্রিয়ায়ই ছিলেন তিনি। তারপর পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সম্প্রতি বিবিসির সাংবাদিক কলিন প্যাটারসনের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেছেন আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে তার অযোগ্যতার বিষয়টিও উঠে এসেছে। আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার দাবি করেছেন যে যদি সুযোগ থাকত তাহলে তিনি চমৎকার একজন প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন। শোয়ার্জনেগার বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমি একজন ভালো প্রেসিডেন্ট হতে পারতাম!’ তবে এখনই প্রেসিডেন্ট হওয়ার সব আশা ত্যাগ করছেন না ৭৬ বছর বয়সী এ অভিনেতা। তিনি মনে করেন, সংবিধান সংশোধনের সুযোগ আছে। কখনো হয়তো অভিবাসীসংক্রান্ত এসব আইনের সংস্কার হবে, আর তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে এ আইন পরিবর্তনের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেবেন না বলে জানান শোয়ার্জনেগার। তিনি বলেন, ‘আমি যদি আইনটি পরিবর্তনের চেষ্টা করি, তবে তা কিছুটা স্বার্থপরের মতোই আচরণ হবে।’
তবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ না থাকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কোনো ক্ষোভ বা আক্ষেপ নেই আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারের। বিবিসিকে তিনি জানান, তিনি যা কিছু অর্জন করেছেন, সবই যুক্তরাষ্ট্রে থাকার কারণে সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাকে অনেক সুযোগ দিয়েছে। এ দেশের নাগরিকরা আমাকে সাদরে বরণ করেছে। আমার সাফল্যের পথে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।’ তাই যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুযোগ না দিলেও তিনি কোনো অভিযোগ করবেন না বলে জানান।
আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারের জন্ম ১৯৪৭ সালের ৩০ জুলাই। ৭৬ বছর বয়সেও তরুণ এ নির্মাতা একাধারে অভিনেতা, রাজনীতিবিদ ও বডিবিল্ডার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। টার্মিনেটর ও দি এক্সপেন্ডেবলস সিরিজের সিনেমাগুলো দিয়ে তিনি বর্তমান প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।